১৯৭১ হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো, এ মহান লেখকের বইটি জীবন বাস্তবতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার জন্য ‘ ১৯৭১ হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ ‘ বইটি পড়ে আমাদের পারিবারিক সামাজিক জীবন রীতির জন্য যে উপদেশ নামা দেওয়া আছে সেগুলো জেনে আমাদের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সহজ হবে।
১৯৭১ হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ
জনপ্রিয় এই বুড়িগঙ্গা টিভি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘ ১৯৭১ হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ ‘ সম্পর্কে অল্প কথায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে,পাঠকের বুক রিভিউটি, এবং লেখককের দূরদর্শী সম্পূর্ণ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে, বুক রিভিউটি তে তথ্যবহুল আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বুক রিভিউ
হুমায়ূন আহমেদ (১৩ নভেম্বর ১৯৪৮–১৯ জুলাই ২০১২) ছিলেন একজন বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক বলে গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক।
“১৯৭১” হুমায়ূন আহমেদের শত শত রচনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি রচনা। হুমায়ূন আহমেদ এর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা কয়েকটার মধ্যে “১৯৭১” অন্যতম।
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এ উপন্যাসটিকে গল্প হিসেবে ধরে নিলেই হয়তো ভালো। কারণ এখানে লেখক বিশ্লেষণগত হালকা ত্রুটি করেছেন, যা প্রমাণ করে উপন্যাসটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের উপর নির্মিত হলেও ঐতিহাসিক নয়। তিনি মূলত পাকিস্তানি সেনাদের আগমনে বাঙালি মনে কেমন প্রভাব পড়ে সেটিই তুলে ধরতে চেয়েছেন উপন্যাসটিতে।
মীর আলী এবং তার ছেলে বদিকে দিয়ে উপন্যাস শুরু হলেও তারা উপন্যাসে তেমন কোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন নি। তবে উপন্যাসের এক পর্যায়ে অন্ধ মীর আলীকে দেখে মেজর সাহেবের নিজের অন্ধ বাবার কথা মনে পড়ে, যার মাধ্যমে হয়ত লেখক বুঝাতে চেয়েছেন নিষ্ঠুর পাকিস্তানিদের ও হয়তো কোথাও জং ধরা অনুভূতি রয়ে গেছে এখনো।

উপন্যাসের শুরুতে মেজরের সহায়ক হিসেবে রফিক চরিত্রটি প্রথমে অত্যন্ত সাদামাটা মনে হয়। আমার কাছে প্রথমদিকে চরিত্রটি দেখে অত্যন্ত রাগ ই হয়। বাঙালি একজন যুবক বাঙালিদের বিশ্বাসঘাতকতা করেছে সাহায্য করছে পাকিস্তানিদের!! – রফিক চরিত্রটিকে প্রথম দেখলে মানুষ এমনটাই ভাববে। কিন্তু যতই উপন্যাস এগুতে থাকে ততই বুঝা যায় রফিক চরিত্রটি যতটা সাধারণ মনে হয়েছিল ততটা সাধারণ আসলে নয়।
১৯৭১ হুমায়ূন আহমেদ
যুদ্ধের সময় এমন কিছু বাঙালিরা ছিল যারা নিজের জীবন বিপন্ন করে পাকিস্তানিদের বন্ধু সেজে পাকিস্তানিদের হয়ে কাজ করার অভিনয় করত। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানিদের সমস্ত খবরাখবর মুক্তিবাহিনীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। রফিক এখানে তেমনই একটা চরিত্র। সে মেজরের সহযোগী হয়ে কাজ করলেও আড়ালে সে বনে লুকিয়ে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করে।
যদিও উপন্যাসের শেষের দিকে সে ধরা পড়ে যায় কিন্তু মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সে বিন্দুমাত্র বিচলিত হয় না। কৈবর্ত্যপাড়ার আগুনের আলোয় রফিককেও জ্বলন্ত আগুনের শিখা মনে হয় যখন সে বলে ওঠে,
“মেজর সাহেব আমার মনে হয় আপনি জীবিত ফিরে যাবেন না এ দেশ থেকে।”
উপন্যাসে পাকিস্তানিদের বাঙালিদের প্রতি নিচু মনমানসিকতাও বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ পায়। মূলত পাকিস্তানি আগমনে শান্ত একটি গ্রাম, সেখানে শান্তিতে বসবাসরত গ্রামবাসীদের জীবনে কি কি পরিবর্তন আসে তা সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে উপন্যাসে। তাছাড়াও পাকিস্তানিরা এদেশের মা বোনেদের উপর কেমন অত্যাচার করেছে তার কিঞ্চিৎ আভাস ও পাওয়া যায় উপন্যাসে।
আমি সবসময়ই মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস পাঠ করতে জোর দেই এবং সবাইকে অনুরোধ ও করি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক লেখাগুলো পড়ার জন্য। আমার মতে দেশের কৃতি সন্তানদের আত্মত্যাগ সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পারলে কোন মানুষ আর দেশের, দেশের মানুষের ক্ষতি করার চিন্তা দ্বিতীয়বার টিও ভাববে না।
( কৃতজ্ঞ =বই পর্যালোচনা,নবনীতা দত্ত তিথি , বইয়ের নামঃ ১৯৭১ , লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ )
শেষ কথা
মানুষের জীবনে অনেক উত্থান পতন রয়েছে, এই উত্থান পতন চরিত্রগুলো ‘ ১৯৭১ হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ ‘ বইটিতে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে, সুখ দুঃখ হাসি কান্নার জীবনবোধগুলো লেখক তার লেখনীতে তুলে ধরেছে, পাঠক তার নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য এই বইয়ের উপদেশগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।