শিকড়ের সন্ধানে হামিদা মুবাশ্বেরা বুক রিভিউ সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো, এ মহান লেখকের বইটি জীবন বাস্তবতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার জন্য ‘ শিকড়ের সন্ধানে হামিদা মুবাশ্বেরা বুক রিভিউ ‘ বইটি পড়ে আমাদের পারিবারিক সামাজিক জীবন রীতির জন্য যে উপদেশ নামা দেওয়া আছে সেগুলো জেনে আমাদের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সহজ হবে।
শিকড়ের সন্ধানে হামিদা মুবাশ্বেরা বুক রিভিউ
জনপ্রিয় এই বুড়িগঙ্গা টিভি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘ শিকড়ের সন্ধানে হামিদা মুবাশ্বেরা বুক রিভিউ ‘ সম্পর্কে অল্প কথায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে,পাঠকের বুক রিভিউটি, এবং লেখককের দূরদর্শী সম্পূর্ণ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে, বুক রিভিউটি তে তথ্যবহুল আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বুক রিভিউ
দৈনিক ১৭ বার পাঁচ ওয়াক্ত ফরয সালাতে আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে বলি ,”তাদের পথ দান করুন যাদের প্রতি অনুগ্রহ নাযিল করেছেন; তাদের পথ নয় যাদের উপর আপনার গযব বর্ষিত হয়েছে আবার তাদের পথেও নয় যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে। তাহলে কাদের উপর গযব বর্ষিত হলো আর কাদেরকে পথভ্রষ্ট বলা হলো? কেন এসব গযবপ্রাপ্ত ও পথভ্রষ্ট জাতি থেকে আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইছি?পবিত্র আল কুরআনের সবচেয়ে বেশি যে জাতির কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে হযরত মুসা (আঃ) এর কওম বনী ইসরাইল।
বনী ইসরাইল শব্দটার সাথে আমরা সবাই কম-বেশি পরিচিত। কুরআনে বনী ইসরাইল নিয়ে একটা পুরা সূরাই রয়েছে। আবার সুরা বাকারাহ তেও তাদের কথা অনেকবার উল্লেখ আছে। সূরা বাকারাহ অর্থ পড়ছি আর বারবার বনী ইসরাইলের কাহিনী আসছে কিন্তু তাদের উৎপত্তি কিভাবে বুঝতে পারছি না।কুরআনের ভাষাশৈলিকতার অপরূপ নির্দশন হচ্ছে এটা কোনো ইতিহাস গ্রন্থ নয় যে কোনো কাহিনীকে ধারাবাহিক বর্ণনা করবে বরং এটা আল্লাহর নির্দশন সমূহের মধ্যে একটি নিদর্শন যা চিন্তাশীলদের চিন্তার খোরাক জাগাতে পারে।

আমার কাছে মনে হয় সীরাতের পরে যে বইটার কথা বলতে হবে সেটা হবে এই বইটা। লেখিকার সূচনা থেকেই শুরু করলাম।
“কুরআন আমাদের অধিকাংশের জীবনেই অর্থহীন কিছু শব্দমালা, যার অবস্থান শেলফের সবচেয়ে ওপরের তাকে, ধূলিমলিন অবস্থায়।অন্যের কথা আর কি বলব, এই আমিই তো ছোট্ট বেলাতেই হুজুরের কাছে কুরআন খতম দিয়েছিলাম, কিন্তু কুরআন যে বুঝে পড়ার জিনিস, সেটা কেউ কখনো বলেনি! বহুবার ভেবেছি পুরো কুরআন অর্থসহ পড়ে ফেলব। কিন্তু প্রতিবারই একদম শুরুতে গিয়েই আটকে গেছি।সূরা বাকারাহর পুরোটা জুড়ে মুসা (আ) এর কাহিনী বলা হচ্ছে, কোথা থেকে শুরু হয়েছে, কিসের পর কি হল কিছুই বুঝতাম না। তাই উৎসাহ ধরে রাখতে পারতাম না………..”
লেখিকা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) থেকে শুরু করে শেষনবী রাসূল ( সাঃ) পর্যন্ত পথচারণাকে ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করেছেন। সেইসাথে সম্পর্কযুক্ত করে দিয়েছেন উম্মতী মুহাম্মদের জন্য শিক্ষা। সুরা বাকারাহতে দৃষ্টিগোচর হয় যে, বনী ইসরাইল কতৃর্ক যখনই কোনো অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দিচ্ছেন । কিন্তু কেন? যাতে তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং তাদেরকে আল্লাহ বারবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে তাদেরকে সমগ্রবিশ্বের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে। কিন্তু তারা উদ্ব্যত্ব প্রকাশ করতে থাকল আর শেষ পর্যায়ে দুনিয়ার ভোগবিলাসের লোভে আল্লাহর কিতাবসমূহকে সস্তামূল্যে বিক্রয় করে দিল। বস্তুত তারাই ছিল আসমানি কিতাবপ্রাপ্ত এবং তাদের কাছে আল্লাহ সবচেয়ে বেশি নবী রাসূল প্রেরণ করেছিলেন।
আমাদের উৎপত্তি কিভাবে? কিভাবে উম্মাহ এমন তিনভাগে বিভক্ত হল? কি সেই পথচ্যুতি যার কারণে আজ উম্মাহর মাঝে এত বিশৃংখলা?উম্মাহকে তো পৃথিবীতে আল্লাহর নির্দেশিত শৃংখলা বজায় রাখতে আর তাঁর তাওহীদের একত্ববাদ প্রকাশের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে।তবে কেন এই অধঃপতন?
আজ বিশ্বজুড়ে সবদিকে ইহুদিদের জয়জয়কার।কিন্তু তারা কিভাবে এমন হল? যখনই তারা কোনো জাতি দ্বারা বিপর্যস্ত হতো তখনই অন্য কোনো দেশে গিয়ে যাযাবরের মতো জীবনযাপন করত আর সমাজব্যবস্থাকে বিশৃংখলিত করত।
যার একটা নমুনা বর্তমান বাজারব্যবস্থায় সুদভিত্তিক লেনদেন। আরেকটা মেইন পয়েন্ট হল তারা আইনের সুষ্ঠু শাসন প্রতিষ্ঠা করত না। যখন কোনো ধনী শ্রেণিকর্তৃক অপরাধ সংঘটিত হতো তারা এড়িয়ে যেতো আর যখনই একই অপরাধ দরিদ্র, অসহায় কেউ করত তার জন্য শাস্তি আরোপ করা হত।তারাই প্রথম নিজেদের আর জ্যান্টাইলদের মধ্যে পার্থক্যর সূচনা করে।
আল্লাহ সুরা বনী ইসরাইলের ৪-৭নং আয়াতে তাদের দুইবার বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ করেন। প্রথম বার ব্যাবিলনীয়দের দ্বারা, দ্বিতীয়বার রোমান শাসক তিতাস কতৃর্ক জেরুজালেম জয় হওয়া। কথিত আছে, রোমান শাসক তিতাসের আক্রমণের ধরণ এতটাই প্রকট ছিল যে, কোথাও দুইটা ইট একসাথে ছিল না।
সর্বোপরি নিজের অস্তিত্বকে জানতে , নিজের শিকড়কে জানতে হলে আমি বলবো অন্তত একবার এই বইটি পড়ুন। লস নাই, পুরাটাই লাভ হবে ইন শা আল্লাহ।
আল্লাহ লেখিকাকে উত্তম পুরস্কার দান করুক।
হামিদা মুবাশ্বেরা
( কৃতজ্ঞ =বই পর্যালোচনা,রাইসা রাশিদ, বইয়ের নামঃ শিকড়ের সন্ধানে , লেখকঃহামিদা মুবাশ্বেরা)
শেষ কথা
মানুষের জীবনে অনেক উত্থান পতন রয়েছে, এই উত্থান পতন চরিত্রগুলো ‘ শিকড়ের সন্ধানে হামিদা মুবাশ্বেরা বুক রিভিউ ‘ বইটিতে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে, সুখ দুঃখ হাসি কান্নার জীবনবোধগুলো লেখক তার লেখনীতে তুলে ধরেছে, পাঠক তার নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য এই বইয়ের উপদেশগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।