নিজস্ব প্রতিবেদক: পুরান ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজ ঘিরে নানা ধরনের চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও টেন্ডারবাজির অভিযোগ উঠেছে কলেজ ছাত্রদলের সুপার টপের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে ইরফান, ফাহিম, নাজমুল, রোমান ও সিরাজের নাম বিশেষভাবে আলোচনায় এসেছে।
অভিযোগ রয়েছে, ক্যাম্পাসের পাশে পেট্রোল পাম্পের কাছে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে নিয়মিত ভয়-ভীতি দেখানো হয়। ক্যাম্পাসের পাশেই মাছ বাজার বসিয়ে প্রতিদিন বিকাশের মাধ্যমে অন্তত এক হাজার টাকা আদায় করা হয়। শুধু তাই নয়, ফুটপাতের ফুডকোর্ট দোকান বসানোর সময় প্রতি দোকানদারের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা এককালীন নেওয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে এ দোকানগুলো থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার টাকা চাঁদা তোলা হয়, যা কয়েকজনের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়।
অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন, এ ধরনের দোকান উচ্ছেদের কথা উঠলেই প্রথমে তারাই এগিয়ে এসে বাধা দেয়। দোকানদারদের আগেই শিখিয়ে দেওয়া হয় যেন তারা বলে, “আমরা কারও কাছে চাঁদা দিই না।” তবে বাস্তবে ভিন্ন চিত্র পাওয়া যায়।
এছাড়া ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, কলেজ ক্যান্টিন দখল, পানির টাংকির নিচে সরকারি স্থাপনায় দোকান নির্মাণ করে অন্যের কাছে হস্তান্তর এবং বিভিন্ন পরিবহন থেকে মাসিক ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগও উঠেছে। পরিবহনগুলো টাকা না দিলে বাস আটকে রাখা ও নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয় বলেও জানা গেছে।
একই সঙ্গে লক্ষীবাজারের ডিআইটি মার্কেট দখল করে নিচতলায় অফিস বানানো, টেন্ডারবাজি এবং রাজনৈতিক মামলা দিয়ে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগও রয়েছে। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, এরই মধ্যে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বিকাশ স্টেটমেন্টে অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানদার বলেন, “আমরা ব্যবসা করি, ঝামেলা চাই না। যা দিতে বলে তাই দিতে হয়। না দিলে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। আগে ছাত্রলীগকে দিতাম নয় হাজার টাকা আর এদের দিয়েছি চৌদ্ধা হাজার টাকা। ”
আরেকজন যোগ করেন, “এলাকায় দোকান রাখতে হলে তাদের কথামতো চলতেই হয়। আমরা মুখ খুললেও টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।”
কলেজের একাধিক শিক্ষার্থীও বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, ছাত্র রাজনীতির নামে এসব কর্মকাণ্ড ক্যাম্পাস ও আশপাশের পরিবেশ নষ্ট করছে।
এবিষয়ে কবি নজরুল কলেজ ছাত্রদলের অভিযুক্তদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তা সম্ভব হয়নি।