আমার বন্ধু রাশেদ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বুক রিভিউ সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো, এ মহান লেখকের বইটি জীবন বাস্তবতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার জন্য বইটি পড়ে আমাদের পারিবারিক সামাজিক জীবন রীতির জন্য যে উপদেশ নামা দেওয়া আছে সেগুলো জেনে আমাদের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সহজ হবে।
আমার বন্ধু রাশেদ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বুক রিভিউ
জনপ্রিয় এই বুড়িগঙ্গা টিভি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘ আমার বন্ধু রাশেদ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বুক রিভিউ ‘ সম্পর্কে অল্প কথায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে,পাঠকের বুক রিভিউটি, এবং লেখককের দূরদর্শী সম্পূর্ণ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে, বুক রিভিউটি তে তথ্যবহুল আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বুক রিভিউ
“কত বড় এই বিশাল বিশ্বব্রহ্মাণ্ড আর পৃথিবী কত ছোট! সেই ছোট পৃথিবীতে আমরা নিজের দেশের মানুষ নিজের দেশে নিজের ঘরবাড়িতে থাকতে পারিনা। তাড়া খেয়ে বনের পশুর মত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় আমাদের পালিয়ে বেড়াতে হয়!”
জাফর ইকবালকে ব্যক্তিগতভাবে অপছন্দ করলেও তার দুটো বই আমার উইসলিস্টে ছিল। একটা হচ্ছে “আমার বন্ধু রাশেদ”আরেকটা হচ্ছে “আমি তপু”।
“আমার বন্ধু রাশেদ” ই আমার পড়া জাফর ইকবালের প্রথম বই।
এটা একটা কিশোর উপন্যাস যা মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অবস্থা নিয়ে লেখা। বইটা পড়তে আলাদা করে খুব একটা চাপ দিতে হয় নি মাথায় কারণ শিশুদের উপযোগী করেই সহজ সাবলীল ভাষায় লেখা হয়েছে। বইটা পড়ার প্রথমদিকে বেশ মজা পেয়েছি, কিছু শিশুসুলভ ঘটনা পড়ে মনে হয়েছিলো যেন আমিও আবার আমার স্কুলে আমার বন্ধু বান্ধব এর মাঝে ফিরে গিয়েছি। তবে যত আগাতে থাকলাম তখন এই কিশোর উপন্যাসের মধ্যকার টানটান উত্তেজনা বুঝতে শুরু করলাম।
বইয়ের পাতায় অক্ষরের মাঝেই যেন সব দেখতে পারছিলাম ; পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হঠাৎ আক্রমণ, সাধারণ জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার অবক্ষয়, ছোট ছেলেমেয়েদের শৈশবের নীরব অবসান এবং তাদের ছোট্ট মস্তিষ্ক থেকে বেরিয়ে আসা অভাবনীয় সূক্ষ্ম বুদ্ধি যা বড়দেরকেও ওবাক করে দেয়। আরো দেখেছি অযোগ্যরা ক্ষমতা পেলে নিজেকে কতবড় মনে করতে থাকে , অশিক্ষিত বা অল্প শিক্ষিত মানুষ সামান্য টাকার জন্য নিজের সংসার চালানোর জন্য কেমন না বুঝেই রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেয় সেটাও দেখেছি।

এই উপন্যাসের মূল চরিত্র রাশেদ,তার কথা আলাদা করে আর কি বলবো। রীতিমতো ই অবাক হয়েছি। তবে রাশেদের জন্য আমার কিছু প্রশ্ন মনে থেকেই যায়। রাশেদের পরিবারে কে কে আছে, সে সবার থেকে একটু আলাদা কেন, সে কি এখনো পৃথিবীর উপর অভিমান করেই আছে?
আমার বন্ধু রাশেদ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল
এছাড়াও এই উপন্যাস থেকে বেশ কয়েকটা বন্দুক সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনেছি,যা আমার কাছে বেশ উপকারী মনে হয়েছে।
দেশের বিপদে দেশের সর্বসাধারণের জীবনে কেমন অশুভ কালো ছায়া নেমে আসে এবং ছোট কিছু ছেলেদের জীবন কেমন পরিবর্তন হয়ে যায় এবং দেশের জন্য তারা কতদূর যেতে পারে সেটাই এই উপন্যাসে খুব সুন্দর করে তুলে ধরা হয়েছে।
এবার আসি পছন্দের কিছু লাইন নিয়ে:
স্বাধীনতার প্রথম কাজই হচ্ছে বিশ্বাসঘাতকদের খতম করা।
মানুষকে এত ছোট হতে দেখলে নিশ্চয়ই লজ্জা লাগে সবার। কিন্তু আমি চলে যেতেও পারছিলাম না নিষিদ্ধ জিনিস দেখার এক রকম আকর্ষণ থাকে আমি সেই আকর্ষণের মাঝে আটকা পড়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।
দরকার হলে দেশের জন্য জান দিও।আল্লাহ খুশি হবে। নিজের দেশকে ভালোবাসা হচ্ছে ঈমানের অংশ।যে দেশকে ভালোবাসে না সে হচ্ছে বেইমান।যত নামাজ পড়ুক, রোজা রাখুক তবুও সে বেইমান। বেইমানের জায়গা হচ্ছে জাহান্নামে।
আমরাও যুদ্ধ করতে এসেছি। এটা আপনারা যেরকম দেশ আমাদেরও সেই রকম দেশ।
যেখানে ভয় পাওয়ার কথা সেখানে সবাই ভয় পায়। শুধু যারা ক্ষ্যাপা তারা কখনো ভয় পায় না। ভয় পেতে কোন দোষ নেই ,কিন্তু ভয় পেয়েও মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করে যেতে হবে।
তুই আমার বন্ধু হবি? একবারে প্রাণের বন্ধু। সারা জীবনের বন্ধু। মরে গেলেও যে বন্ধু থেকে যায় সেই বন্ধু। হবি?
আহা! এই যে পৃথিবী ,আকাশ বাতাস, নদী, গাছপালা আর আমি দেখবো না। কোনদিন দেখবো না।
সবশেষে বলতে চাই, কিশোর উপন্যাস পড়ার জন্য কিন্তু কিশোর হতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই। দেশপ্রেম সম্পর্কিত এই উপন্যাস টা আমি সবাইকে পড়তে অনুরোধ করবো। আশাকরি আপনাদের ভাল লাগবে।
( কৃতজ্ঞ =বই পর্যালোচনা,আশানুর তাসনিম,নাম – আমার বন্ধু রাশেদ,লেখক- মুহাম্মদ জাফর ইকবাল)
শেষ কথা
মানুষের জীবনে অনেক উত্থান পতন রয়েছে, এই উত্থান পতন চরিত্রগুলো ‘ আমার বন্ধু রাশেদ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বুক রিভিউ ‘ বইটিতে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে, সুখ দুঃখ হাসি কান্নার জীবনবোধগুলো লেখক তার লেখনীতে তুলে ধরেছে, পাঠক তার নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য এই বইয়ের উপদেশগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।