নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালী সদর উপজেলার একটি মাদরাসা থেকে জোবায়ের ইবনে জিদান (১২) নামের এক ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত জিদানের পরিবারের দাবি, মাদরাসার শিক্ষকরা নির্যাতন করে তাকে হত্যা করেছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় নোয়াখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহব্বতপুর এলাকার তানজিরুল কোরআন সোবহানিয়া মাদরাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জিদান মধ্য চর উরিয়া গ্রামের ওমানপ্রবাসী আমিরুল ইসলাম সোহেলের ছেলে এবং মাদরাসার হিফজ বিভাগের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।
জিদানের মা সাবরিনা খাতুন জুমা জানান, তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে জিদান মাদরাসায় থেকে হিফজ পড়াশোনা করছিল। মঙ্গলবার বিকেলে জিদানের দাদা নুরুল হক বাবুল নাতিকে দেখতে গিয়ে তাকে ফ্লোরে বমি করা অবস্থায় পান। তখন মাদরাসার মুতামিম (প্রধান শিক্ষক) আফজাল হোসাইন জানান, “জিদান পড়াশোনায় দুর্বল, তাই শাস্তি দেওয়া হয়েছে।”
জুমা অভিযোগ করেন, বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মুতামিম ফোন করে জানান, “আপনার ছেলে গলায় ফাঁস দিয়েছে, দ্রুত হাসপাতালে যান।” তিনি দাবি করেন, “আমার ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করে পরে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে।” এর আগেও ছেলেকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল বলে তিনি জানান।
তবে মাদরাসার মুতামিম আফজাল হোসাইন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “জিদান বিকেলে শৌচাগারে ঢোকে। অনেকক্ষণ পর দরজা না খোলায় দুই ছাত্র দরজা ধাক্কা দিয়ে খুলে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে আমাদের জানায়।”
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. শাহরিয়ার বলেন, “ফাঁসের ঘটনায় সাধারণত গলার পেছনে দাগ থাকে না। কিন্তু জিদানের গলার পেছনে দাগ রয়েছে, যা আত্মহত্যার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
এ বিষয়ে সুধারাম মডেল থানার ওসি মো. কামরুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। মাদরাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তদন্তের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”