গণিত আব্দুল কাদের বুক রিভিউ সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো, এ মহান লেখকের বইটি জীবন বাস্তবতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, গণিত শুধু সংখ্যা, সমীকরণ, গণনা অথবা অ্যালগরিদম সম্পর্কিত নয়; এটি একটি বোঝার বিষয়।
গণিত আব্দুল কাদের বুক রিভিউ
জনপ্রিয় এই বুড়িগঙ্গা টিভি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সম্পর্কে অল্প কথায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে,পাঠকের বুক রিভিউটি, এবংগণিত শুধু সংখ্যা, সমীকরণ, গণনা অথবা অ্যালগরিদম সম্পর্কিত নয়; এটি একটি বোঝার বিষয়। , বুক রিভিউটি তে তথ্যবহুল আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
আমেরিকান গণিতবিদ উইলিয়াম পল থার্স্টন বলেছিলেন যে, গণিত শুধু সংখ্যা, সমীকরণ, গণনা অথবা অ্যালগরিদম সম্পর্কিত নয়; এটি একটি বোঝার বিষয়। অর্থাৎ গণিত মানে সুত্র মুখস্থ আর কঠিন ক্যালকুলেশন নয়।
গণিত হচ্ছে বিজ্ঞানের ভাষা, জীবনের ভাষা এবং বাস্তব চিন্তা করার আনন্দ। জীবনের শুরু থেকে মহাবিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে আছে গণিতের অপার সৌন্দর্য। গণিতের এই সুভাস ছড়িয়ে দিতে আব্দুল কাদেরর প্রয়াস “সংখ্যা সাহিত্য (গণিতের ভেতরের রহস্য)”। বইটির নামের সাথে যথার্থই মিল রয়েছে।
গণিতের বাস্তবধর্মী বিষয়গুলে চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আশা করছি গণিত প্রেমীরা আনন্দের সাথে অনেক কিছু শিখতে পারবে এবং সর্বোপরি গণিতের প্রতি তাদের ভালোবাসা আরো বাড়বে। তরুণ গণিতবিদ আব্দুল কাদেরের সংখ্যা সাহিত্যের জন্য শুভকামনা রইলো।
( কৃতজ্ঞ =বই পর্যালোচনা,মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক,সহকারী অধ্যাপক,গণিত বিভাগ ,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা, বইয়ের নামঃ গণিত , লেখকঃ আব্দুল কাদের )
বাংলাদেশের গণিতের জনক কে?
বাংলাদেশের গণিতের জনক হিসেবে ড. মুহাম্মদ কায়কোবাদ-কে অনেকেই সম্মানিত করে থাকেন। তিনি বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট গণিতবিদ ও শিক্ষক, যিনি গণিত শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
তবে, ঐতিহাসিকভাবে নির্দিষ্টভাবে “বাংলাদেশের গণিতের জনক” বলা কঠিন, কারণ গণিতের বিকাশে বহু ব্যক্তির অবদান রয়েছে। তবে ড. কায়কোবাদ বাংলাদেশে গণিত অলিম্পিয়াড আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ এবং গণিত চর্চাকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এ শিক্ষকতা করেছেন এবং গণিতপ্রেমীদের অনুপ্রাণিত করেছেন।
গণিত বই কে আবিষ্কার করেছিলেন?
গণিত বইয়ের আবিষ্কার বা সৃষ্টির কৃতিত্ব কোনো একক ব্যক্তি বা সময়কে দেওয়া যায় না। মানব সভ্যতার শুরু থেকেই গণিত চর্চা চলে আসছে এবং ধীরে ধীরে বিভিন্ন পাণ্ডুলিপি ও বই আকারে সংরক্ষিত হয়েছে। তবে, যদি প্রাচীনতম গণিত বইগুলোর কথা বলি, তাহলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ ও লেখকের নাম উল্লেখ করা যায়—
প্রাচীন গণিত বই ও লেখকগণ:
- “Rhind Mathematical Papyrus” (প্রায় ১৬৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) – এটি প্রাচীন মিশরের গণিত বই, যেখানে ভগ্নাংশ ও জ্যামিতি নিয়ে আলোচনা আছে।
- “The Nine Chapters on the Mathematical Art” (প্রায় ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) – চীনের অন্যতম পুরনো গণিত গ্রন্থ, যেখানে বীজগণিত ও জ্যামিতিক গণনার পদ্ধতি ছিল।
- “Elements” – ইউক্লিড (প্রায় ৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) – এটি সম্ভবত গণিতের ইতিহাসে সবচেয়ে বিখ্যাত বই, যেখানে জ্যামিতির ভিত্তি স্থাপন করা হয়।
- “Aryabhatiya” – আর্যভট্ট (৪৯৯ খ্রিস্টাব্দ) – ভারতীয় গণিতবিদ আর্যভট্টের লেখা বই, যেখানে π (পাই) এর মান ও ত্রিকোণমিতির ধারণা দেওয়া হয়।
- “Al-Kitab al-Mukhtasar fi Hisab al-Jabr wal-Muqabala” – আল খোয়ারিজমি (৮২৫ খ্রিস্টাব্দ) – এটি বীজগণিতের প্রথম আনুষ্ঠানিক বই, যেখানে “Algebra” শব্দের জন্ম হয়।
আধুনিক গণিত বই:
আধুনিক গণিতের ভিত্তি গড়ে ওঠে ১৭-২০ শতকের মধ্যে, যেখানে আইজ্যাক নিউটন, গটফ্রিড লাইবনিজ, কার্ল ফ্রিডরিখ গাউস, ডেভিড হিলবার্ট, এবং আরও অনেক গণিতবিদের বই ও গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
গণিত দিবস কত তারিখে?
গণিত দিবস বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন দিনে পালিত হয়। তবে দুটি গুরুত্বপূর্ণ গণিত দিবস বিশেষভাবে পরিচিত—
১️ আন্তর্জাতিক গণিত দিবস (Pi Day) – ১৪ মার্চ
প্রতি বছর ১৪ মার্চ (3/14) তারিখে π (পাই) দিবস পালন করা হয়, কারণ π-এর মান ৩.১৪।
২০১৯ সালে ইউনেস্কো এই দিনটিকে “আন্তর্জাতিক গণিত দিবস” হিসেবে ঘোষণা করে।
এই দিনে গণিতপ্রেমীরা π-সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, বক্তৃতা ও গণিত উৎসব আয়োজন করে।
২️ জাতীয় গণিত দিবস (ভারত) – ২২ ডিসেম্বর
ভারতের প্রখ্যাত গণিতবিদ শ্রীনিবাস রামানুজানের জন্মদিন (২২ ডিসেম্বর) জাতীয় গণিত দিবস হিসেবে পালিত হয়।
২০১২ সালে ভারত সরকার এই দিনটিকে গণিত দিবস ঘোষণা করে।
বাংলাদেশে গণিত দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা না হলেও, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গণিত উৎসব আয়োজন করে।
শেষ কথা
মানুষের জীবনে অনেক উত্থান পতন রয়েছে, এই উত্থান পতন চরিত্রগুলো বইটিতে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে, গণিত শুধু সংখ্যা, সমীকরণ, গণনা অথবা অ্যালগরিদম সম্পর্কিত নয়; এটি একটি বোঝার বিষয়।
