কারাগারের রোজনামচা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বুক রিভিউ সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো, এ মহান লেখকের বইটি জীবন বাস্তবতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার জন্য বইটি পড়ে আমাদের পারিবারিক সামাজিক জীবন রীতির জন্য যে উপদেশ নামা দেওয়া আছে সেগুলো জেনে আমাদের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সহজ হবে।
কারাগারের রোজনামচা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বুক রিভিউ
জনপ্রিয় এই বুড়িগঙ্গা টিভি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘ কারাগারের রোজনামচা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বুক রিভিউ ‘ সম্পর্কে অল্প কথায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে,পাঠকের বুক রিভিউটি, এবং লেখককের দূরদর্শী সম্পূর্ণ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে, বুক রিভিউটি তে তথ্যবহুল আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বুক রিভিউ
রিভিউঃ “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান”একজন রাজনীতির কবি।যার হাত ধরে জন্ম হয়েছে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের।অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোসহীন এই নেতার জীবনের বড় একটা অংশ কেটেছ কারাগারে।বঙ্গবন্ধুর সেই কারাগারের স্মৃতি ও জীবন-যাপন নিয়ে রচিত হয়েছে “কারাগারের রোজনামচা” গ্রন্থটি।মূলত ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত কারাস্মৃতি প্রকাশ পেয়েছে গ্রন্থটিতে।বঙ্গবন্ধুর ৯৭তম জন্মবার্ষিকী তে বাংলা একাডেমি বইটি প্রকাশ করে।
কারাগারে বঙ্গবন্ধুর জীবন-যাপন,বিভিন্ন ঘটনা,বইটির মূল পটভূমি,বইটির উপকারিতা এবং একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে বইটি থেকে পাওয়া দিকনির্দেশনার বিবেচনায় আমি “কারাগারের রোজনামচা” বইটির রিভিউ তুলে ধরছি-

কারাগারের রোজনামচা বুক রিভিউ
মূলত বঙ্গবন্ধু যতবার জেলে গিয়েছেন তার সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধুকে সাথে করে কাগজ কলম দিয়েছেন;যাতে করে বঙ্গবন্ধু তার কারাগারের ঘটনাগুলো লিপিবদ্ধ করে রাখতে পারেন।পরবর্তীতে সেই ঘটনাগুলোই বই আকারে প্রকাশিত হয়।জেল জীবন,যন্ত্রণা, সেখানে অবস্থানরত কয়েদীদের অবস্থা, রাজনৈতিক অবস্থা, কারাগারে আওয়ামী লীগ নেতাদের দুঃখ দূর্দশা ফুটে উঠেছে বইটিতে।বঙ্গবন্ধুর লেখা এই ডায়েরিগুলো উদ্ধার করতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে মারাত্মক বেগ পেতে হয়েছিলো।
ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে দেশ ও জনগণের স্বার্থই বড় এটা বঙ্গবন্ধু সবসময় তার রাজনীতিতে দেখিয়ে এসেছেন।দু-একজনের দেশ বিরোধী মনোভাব তাকে প্রচন্ড আহত করে যার উল্লেখও তিনি করেছন তার গ্রন্থে।১৯৬৬সালের বন্যার পর ছয়দফার আন্দোলনে কিছু মানুষের পাকিস্তানি শাসকদের সাথে হাত মিলিয়ে দেশের মানুষের সাথ বেইমানির চিত্রের বর্ণনা দেয়া হয়েছে বইটির ১১৭ নাম্বার পৃষ্ঠায়।বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী তার জন্য জেলগেটে খাবার নিয়ে এলে তিনি কয়েদিদের মাঝে সমানভাবে তা বন্টন করে দিতেন।
কয়েদিদের বর্ণনায় তিনি উক্তি দেন- “থালা বাটি কম্বল,জেলখানার সম্বল”।কারাগারের রোজনামচা বইয়ের ২১১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে ছাত্রলীগের কথা।ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর নিজের হাতে গড়া সংগঠন এবং এর বর্ণণায় তিনি বলেন তোমরা এই সংগঠনকে কখনো ভেঙ্গে দিও না।জেলখানার নির্মম বাস্তবতা,পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীদের আচরণ সম্পর্কে তিনি ২৫৮ পৃষ্ঠায় একটি উক্তি দেন- পড়েছি পাঠানের হাতে,খানা খেতে হবে এক সাথে।
“৮ফেব্রুয়ারি তার দুই বছরের ছেলে শেখ রাসেল তাকে জেলে দেখতো আসে।তার দুঃখভরা স্মৃতিও তিনি বর্ণনা করেছেন।জেল জীবনে তার সঙ্গী হয়েছিল প্রকৃতি এবং বই।তার বর্ণণা রয়েছে বইয়ের ২১৮ পৃষ্ঠায়। ১৯৫৮ সালে সিভিল ওয়ার্ডের মাঠে দুটো হলুদ পাখি এসে বসতো।বঙ্গবন্ধু এসবের বর্ণনা দিতে গিয়ে যেনো নিজেই হারিয়ে গিয়েছিলেন।এমনকি নিজের জন্মদিনকে তুচ্ছ করে তিনি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর ব্রত নিয়েছিলেন। “কারাগারের রোজনামচা” বইয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বইটিতে বঙ্গবন্ধু জেলে থাকা অবস্থায় তার স্ত্রীর আত্মত্যাগ জাতির পিতা তুলে ধরেছেন।
এই বইটির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বইটি ১৯৬৬-১৯৬৮ সালের দিনলিপি হলেও বঙ্গবন্ধু কখনো ফিরে গিয়েছেন ভাষা আন্দোলনে আবার কখনো বাংলার দাবিতে গড়া সেই সংগ্রামে।বইটির প্রত্যেকটি দিনলিপিতে বাঙালির প্রতি জাতির পিতার ত্যাগ ও আত্মদান ফুটে উঠেছে সুনিপুণভাবে।ব্যক্তিত্বকে ছাপিয়ে কঠিন সত্যগুলো বঙ্গবন্ধু তুলে ধরেছেন।কারাগারের রোজনামচা নিঃশব্দে প্রতিটি মানুষের জন্য অনুপ্রেরণা।আমার পড়া শ্রেষ্ঠ বইগুলোর তালিকায় প্রথম সারিতে থাকবে এই বইটি।একজন দেশপ্রেমিক এবং প্রকৃত নাগরিকের নিজের দেশমাতৃকার জন্য, দেশের মানুষের জন্য যেই কর্তব্যগুলো তার প্রত্যেকটির শিক্ষা আমরা এই বইটি থেকে পাই বলে আমি মনে করি।
( কৃতজ্ঞ = বই পর্যালোচনা : মহিমা সরকার মিম , বইয়ের নামঃ “কারাগারের রোজনামচা”,বইয়ের লেখকঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান)
শেষ কথা
মানুষের জীবনে অনেক উত্থান পতন রয়েছে, এই উত্থান পতন চরিত্রগুলো ‘ কারাগারের রোজনামচা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বুক রিভিউ ‘ বইটিতে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে, সুখ দুঃখ হাসি কান্নার জীবনবোধগুলো লেখক তার লেখনীতে তুলে ধরেছে, পাঠক তার নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য এই বইয়ের উপদেশগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।