সময় কখনো ফিরে আসে না শাইখ আব্দুল মালিক আল কাসিম বুক রিভিউ সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো, এ মহান লেখকের বইটি জীবন বাস্তবতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার জন্য ‘ সময় কখনো ফিরে আসে না শাইখ আব্দুল মালিক আল কাসিম বুক রিভিউ ‘ বইটি পড়ে আমাদের পারিবারিক সামাজিক জীবন রীতির জন্য যে উপদেশ নামা দেওয়া আছে সেগুলো জেনে আমাদের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সহজ হবে।
সময় কখনো ফিরে আসে না শাইখ আব্দুল মালিক আল কাসিম বুক রিভিউ
জনপ্রিয় এই বুড়িগঙ্গা টিভি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘ সময় কখনো ফিরে আসে না শাইখ আব্দুল মালিক আল কাসিম বুক রিভিউ ‘ সম্পর্কে অল্প কথায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে,
পাঠকের বুক রিভিউটি, এবং লেখককের দূরদর্শী সম্পূর্ণ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে, বুক রিভিউটি তে তথ্যবহুল আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বুক রিভিউ
সময় এক মূল্যবান সম্পদ, এর বিনিময় হয় না। একবার যে সময় চলে যায় তা আর কখনো ফিরে পাওয়া যায় না। আর এই সময়ের মূল্য তাৎপর্য, গুরুত্ব, মাহাত্ম্য যে কত বেশি সেদিকটি ইঙ্গিত করেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা মহাগ্রন্থ আল কুরানে এই সময়ের কসম করেছেন।
তিনি বলেন,
۞ وَالْعَصْرِ
❝সময়ের কসম❞
[ সূরা আসর, আয়াত-০১ ]
বলা বাহুল্য মহান সৃষ্টিকর্তা সেই জিনিসেরই কসম খেয়ে থাকেন, যার বড় গুরুত্ব আছে। সুতরাং সময়ের যে কোনো মূল্য হয় না, কারণ একবার যে সময় চলে যায় তা কোনোকিছুর বিনিময়েই আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। তাই আমাদের ভাবা উচিত আমরা কি সালাফে সালিহিনদের মতো সময়ের সদ্ব্যবহার করছি নাকি ইবাদাতবিমুখ হয়ে করে যাচ্ছি সময়ের অপচয়! হে ভাই আমার! একবার নিজেকে প্রশ্ন করুন সালাফদের পথ ছেড়ে আজ আমরা কোথায়?

❏ বই পরিচিতি :
❛সময় কখনো ফিরে আসে না❜ – বইটি বর্তমান উদাসীন মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি মূল্যবান কিতাব। বইটিতে খুবই সুন্দরভাবে সময়ের গুরুত্ব, মাহাত্ম্য, সময় হিফাজতের কলাকৌশল, সালাফে সালিহিনদের কাছে সময়ের মূল্য, তাঁরা কিভাবে সময়ের সদ্ব্যবহার করেছে ইত্যাদি বিষয়সমূহ উপস্থাপন করা হয়েছে। উক্ত বইটিকে মূলত ৩ টি পার্টে ভাগ করা হয়েছে। তন্নধ্য প্রথমটি হলো সময়ের পরিচয় ও প্রকারভেদ; দ্বিতীয়ত মানুষের দুটি শ্রেণি নিয়ে আলোচনা এবং তৃতীয় বিষয়টি হলো সময়ের বৈশিষ্ট্য নিয়ে।
নিম্নে এই ৩ টি ভাগ নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা যাক-
১) সময়ের পরিচয় বোঝাতে সম্মানিত লেখক প্রথমত মহাগ্রন্থ আল কুরআনের আলোকেই বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ তা’য়ালা সময়ের মাহাত্ম্য বুঝাতে পবিত্র কুরআনের যেসকল আয়াত গুলোতে কসম করেছেন সেইসকল আয়াত উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও মানুষের দুটি অবস্থান নিয়ে আলোচিত হয়েছে। প্রথমত মানুষ যখন মৃত্যুমুখে ঢোলে পড়ে তখন সে আক্ষেপ করে তাকে যদি একটুখানি সময় দেওয়া হতো! দ্বিতীয়ত আখিরাতের ভীষণ মুহূর্তেও মানুষ এই আক্ষেপ করবে, তাকে যদি আরেকবার দুনিয়ায় পাঠানল হতো! কিন্তু ভাই আমার, সময় কখনো ফিরে আসে না। এরপরে সময়ের সময়ের ৩ টি প্রকারভেদ যথা: অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ কে নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
২) মানুষের ২ শ্রেণির মধ্যে একশ্রেণি হলো যারা দুনিয়ার পাথেয় জোগাড়ে ব্যস্ত আর অপর শ্রেণি হলো যারা আখিরাতের চিন্তা-ভাবনা নিয়েই ব্যস্ত। তাদের ফিকির আখিরাতকে নিয়েই। কিভাবে তারা আখিরাতের অনন্তকালের জীবনকে করে তুলবে স্বাচ্ছন্দ্যময় ও আরামদায়ক কিন্তু প্রথম শ্রেণির ব্যক্তিরা দুনিয়ার চাকচিক্যর মোহে পড়ে ক্ষণস্থায়ী এই দুনিয়ার ভোগ বিলাসেই মত্ত হয়ে রয়েছে। তারা সময়কে কোনো পড়য়াই করে না।
এরা আল্লাহর ইবাদাত থেকে বিমুখ হয়ে সরল-সঠিক পথ থেকে বিচ্যুতি হয়ে গেছে। এরা ভুলে গেছে সালাফে সালিহিনদের বাতলে দেওয়া পথ যার ফলে তারা বিপথে চলতে শুরু করেছে। হে মুসলিম ভাই আমার! এভাবে নিজেকে ধ্বংস করে দিবেন নাহ। একটু সময়ের মূল্য বুঝুন যেভাবে সালাফে সালিহিনরা এই সময়ের মূল্য বুঝেছে। তাঁদের পথ ধরে চললে আপনিও সময়ের সদ্ব্যবহার করতে পারবেন
ইন শা আল্লাহ।
৩) সর্বশেষ বইটিতে সময়ের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হয়েছে। সময়ের বৈশিষ্ট্যর একটি হলো সময় দ্রুতই চলে যাই। প্রিয় ভাই আমার! একবার যে সময় চলে যায় তা হাজার চেষ্টা করলেও ফিরে পাবেন না, তাই একটু সময়ের মূল্য বুঝে এর সদ্ব্যবহার করুন সালাফে সালিহিনদের মতো; দেখবেন আপনার জীবন হয়ে উঠবে সফল।
ভাই! সময় কখনো ফিরে আসে না আর এক মুহূর্তও কোনোকিছুর বিনিময়ে পাবেন না কারণ সময়ের কোনো বিনিময় হয় না। তাই মৃত্যুর আগেই নিজের সময়ের সঠিক ব্যবহার করা এবং তা আল্লাহর ইবাদতে ব্যয় করাই মুমিনের কর্তব্য। সময় হলো মানুষের মূল্যবান সম্পদ। তাই মানবজীবনে সম্পদের সঠিক ব্যবহার করা আমাদের দায়িত্ব। তাই চলুন সময়ের সদ্ব্যবহার করে আমরা সালাফে সালিহিনদের মতো জান্নাতের পথে চলি।
❏ বইটির ভালো লাগা বিষয় :
বইটির সবচেয়ে ভালোলাগা বিষয় সালাফে সালিহিনদের মূল্যবান বক্তব্যগুলোর প্রতিটির রেফারেন্স দিয়ে সুন্দরভাবে উপস্থাপণ করা হয়েছে।
❏ বইটি যাদের উপকারে আসবে :
বর্তমান ঘুমন্ত মুসলিমদের জাগিয়ে তুলে সময়ের মূল্য বোঝাতে এবং সময়কে সালাফে সালিহিনদের মতো সদ্ব্যবহার করতে আগ্রহী করে তুলবে। বইটি আকারে ছোট্ট হলেও প্রতিটি যুবক-যুবতীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা যুবক বয়সে যদি তারা সময়ের সদ্ব্যবহার শিখে যায় তাহলে ভবিষ্যৎ জীবনের পাথেও অর্জন এবং সময়কে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে খুব সহজ হয়ে পড়বে।
❏ লেখক পরিচিতি :
ড. শাইখ আব্দুল মালিক আল কাসিম সৌদি আরবের রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আরব বিশ্বের একজন খ্যাতনামা লেখক, গবেষক ও দাঈ। তিনি জন্মসূত্রেই পেয়েছিলেন প্রখর মেধায তীক্ষ্ণ প্রতিভা আর ইলম অর্জনের অদম্য স্পৃহা। আনুষ্ঠানিক পড়াশোনা শেষ করে আত্মনিয়োগ করেন লেখালেখিতে__গড়ে তোলেন ❛দারুল কাসিম লিন নাশারি ওয়াত তাওজি❜ নামের এক প্রকাশনা সংস্থা। তিনি উম্মাহকে একে একে সত্তরটিরও অধিক অমূল্য গ্রন্থ উপহার দিয়েছেন।
( কৃতজ্ঞ =বই পর্যালোচনা,আব্দুল্লাহ ইউসুফ, বইয়ের নামঃসময় কখনো ফিরে আসে না, লেখকঃশাইখ আব্দুল মালিক আল কাসিম)
শেষ কথা
মানুষের জীবনে অনেক উত্থান পতন রয়েছে, এই উত্থান পতন চরিত্রগুলো বইটিতে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে, সুখ দুঃখ হাসি কান্নার জীবনবোধগুলো লেখক তার লেখনীতে তুলে ধরেছে, পাঠক তার নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য এই বইয়ের উপদেশগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।