শেষ মৃত পাখি শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য বুক রিভিউ সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো, এ মহান লেখকের বইটি জীবন বাস্তবতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার জন্য ‘ শেষ মৃত পাখি শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য বুক রিভিউ ‘ বইটি পড়ে আমাদের পারিবারিক সামাজিক জীবন রীতির জন্য যে উপদেশ নামা দেওয়া আছে সেগুলো জেনে আমাদের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সহজ হবে।
শেষ মৃত পাখি শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য বুক রিভিউ
জনপ্রিয় এই বুড়িগঙ্গা টিভি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘ শেষ মৃত পাখি শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য বুক রিভিউ ‘ সম্পর্কে অল্প কথায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে,পাঠকের বুক রিভিউটি, এবং লেখককের দূরদর্শী সম্পূর্ণ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে, বুক রিভিউটি তে তথ্যবহুল আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য বুক রিভিউ
এখন মনে হচ্ছে এ আমি কি পড়লাম!!! গল্পের ভেতর গল্প, উপন্যাসের ভেতরে উপন্যাস, থ্রিলের ভেতরে থ্রিল। সবচেয়ে চমকপ্রদ ব্যাপার হচ্ছে একটা উপন্যাসের রহস্যের সমাধান করতে হলে আরেকটা রহস্য উপন্যাসের সমাধান করতে হবে।
সত্তরের দশকে খু*ন হন প্রতিশ্রুতিবান কবি অমিতাভ মিত্র। আর তার খু*নের জন্য সন্দেহভাজন হন তারই প্রাণাধিক বন্ধু অরুণ চৌধুরী। কিন্তু খু*নের সময় অরুণ তো থানায়। তাহলে খু*নটা কে করলো? অরুনই নাকি অন্য কেউ? কেন করলো?
৪৪ বছর আগে ঘটে যাওয়া রহস্য নিয়ে গল্প লেখার জন্য দার্জিলিং ছুটে যান তনয়া ভট্টাচার্য নামের এক সাংবাদিক। উনি গল্পের বিভিন্ন দিক খুজে বের করেন এবং খুব সুক্ষ্মভাবে তা গল্পে প্রতিস্থাপন করার চেষ্টা করেন।
আর এই রহস্য উন্মোচন করতে হলে পড়তে হবে অমিতাভের লিখে যাওয়া শেষ অসমাপ্ত উপন্যাস। এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে অমিতাভের মৃত্যুর রহস্য। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো অমিতাভের উপন্যাসের চরিত্র, গল্প সবই যেন বাস্তবের সাথে মিলে যায়। তাহলে কি অমিতাভের আশংকা ছিল যে তিনি খু*ন হতে পারেন আর তাই ক্লু হিসেবে একটা রহস্য গল্প লিখতে শুরু করেছিলেন? অরুণ চৌধুরী তনয়াকে এই উপন্যাস পড়তে দেন।
“পৃথিবীর সবথেকে বুদ্ধিমান এবং নিখুঁত খু*নি হিসেবে তুমি কাউকেই দাগিয়ে দিতে পারবে না। সহজ কারণ। যে খু*নটা নিখুঁত হবে, তার খু*নি হিসেবে তুমি কাউকে শনাক্ত করতে পারবে না। ভাববে আত্মহ*ত্যা, বা অ্যাক্সিডেন্ট। আর শনাক্ত করলে, সেটা নিখুঁত হবে না।”
বইয়ের প্রথমেই এই কথাটি যে কোনো পাঠককে আটকে ফেলতে বাধ্য। অমিতাভ মার্ডা*র কেস ৪৪ বছর পর্যন্ত একটা পারফেক্ট মার্ডা*রই ছিল বলা যায়। যখন তনয়া এই রহস্যের সমাধান করে ফেলেন তখন ৫০/৬০ টার মতো পৃষ্ঠা বাকি ছিল। আমি পড়ছিলাম আর ভাবছিলাম সমাধান হয়ে গেলে তবুও এতগুলো পৃষ্ঠা বাকি কেন! তাহলে কি বাকি গল্প তনয়াকে নিয়ে? সে এই গল্প নিয়ে নিরাপদে কলকাতা ফিরে যেতে পারবে কি? বা গল্প প্রকাশ করতে পারবে কি? এটা জানার জন্য বইটা পড়তে হবে আপনাদেরো।
অনেক টুইস্ট এই বইতে আছে যা আপনার মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। আপনি ভাববেন এক, তনয়া ভাববে আরেক কিন্তু হবে আরেকটা। তারপরে দেখা যাবে না এসব কিছুই না আবার অন্য পথে আগাতে হবে। সত্য, মিথ্যে, গল্প, কবিতা সব কিছুর মধ্যে হারিয়ে যেতে হবে এই বই পড়তে পড়তে। বইয়ের পরতে পরতে ক্লু ছড়ানো ছিল। কিন্তু আমি আসলে ধরতে পারি নি। শেষে গিয়ে বুঝতে পেরেছি আসলেই ক্লু গুলো ধরা যেত কিন্তু সমাধান জানার প্রত্যাশায় ক্লু বুঝতে পারি নি। সেই সাথে আছে বৃষ্টি ভেজা দার্জিলিং এর অসাধারণ বর্ননা। এই বর্ষায় পড়ার জন্য এই বইটা একদম পার্ফেক্ট।

শেষ মৃত পাখি বুক রিভিউ
এছাড়াও এ বইতে এসেছে ৭০ দশকের সাহিত্য, রাজনীতি, বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও তার প্রভাব ইত্যাদি বিষয়। আরও এসেছে ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, নকশাল আন্দোলন। লেখক এখানে অনেক কবি এবং তাদের কবিতার রেফারেন্স টেনেছেন। আমার কাছে বইয়ের একটা চমকপ্রদ বিষয় যেটা লেগেছে তা হল প্রায় প্রতিটি অধ্যায়ের শুরুতে একটা করে কবিতা।
আর আমার সবচেয়ে পছন্দের কবিতা হচ্ছে,
“Yesterday upon the stair
I met a man who wasn’t there
He wasn’t there again today
I wish, I wish he’d go away.”
এই কবিতার মধ্যেও ক্লু আছে যেটা সব শেষে বোঝা যায়।
( কৃতজ্ঞ = রিভিউ লেখকঃ নুসরাত মিমি, বই: শেষ মৃত পাখি , লেখক: শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য )
শেষ কথা
মানুষের জীবনে অনেক উত্থান পতন রয়েছে, এই উত্থান পতন চরিত্রগুলো ‘ শেষ মৃত পাখি শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য বুক রিভিউ ‘ বইটিতে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে, সুখ দুঃখ হাসি কান্নার জীবনবোধগুলো লেখক তার লেখনীতে তুলে ধরেছে, পাঠক তার নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য এই বইয়ের উপদেশগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।