যশোহা বৃক্ষের দেশে হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো, এ মহান লেখকের বইটি জীবন বাস্তবতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার জন্যবইটি পড়ে আমাদের পারিবারিক সামাজিক জীবন রীতির জন্য যে উপদেশ নামা দেওয়া আছে সেগুলো জেনে আমাদের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সহজ হবে।
যশোহা বৃক্ষের দেশে হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ
জনপ্রিয় এই বুড়িগঙ্গা টিভি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘ যশোহা বৃক্ষের দেশে হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ ‘ সম্পর্কে অল্প কথায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে,পাঠকের বুক রিভিউটি, এবং লেখককের দূরদর্শী সম্পূর্ণ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে, বুক রিভিউটি তে তথ্যবহুল আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ
হুমায়ূন আহমেদ একজন বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক,ছোটগল্পকার,নাট্যকার এবং গীতিকার,চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বিংশ শতাব্দীর একজন জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক। তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক বলা হয়।
“যশোহা বৃক্ষের দেশে” উনার অন্যতম বিখ্যাত ভ্রমণ কাহিনি। এখানে উনি উনার আমেরিকা ভ্রমণ নিয়ে লিখেছেন। উনি ভ্রমণ কাহিনি লিখার ক্ষেত্রে অন্য সবার থেকে আলাদা। উনি গল্পের মতো করেই উনার ভ্রমণ সম্পর্কে জানান। অযথা গাদাগাদি তথ্য দেন না। কথা বলতে বলতে যতটুকু তথ্য দেওয়া প্রয়োজন ততটুকুই দেন।
আমেরিকা ভ্রমণে উনার দেখা সবচেয়ে সুন্দর এবং আকর্ষণীয় জিনিস ছিল যশোহা বৃক্ষ। তাই তার এই অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি বইয়ের নামকরণ করেছেন “যশোহা বৃক্ষের দেশে”।
তখন এপ্রিল মাস চলছে,উনি কাজ করছেন ” আগুনের পরশমণি ” চলচ্চিত্র নির্মাণে। তখনই আমেরিকা থেকে ডাক আসে একটি সম্মেলনের জন্য। তিনি তার চার ছেলেমেয়ে এবং স্ত্রী গুলতেকিনকে নিয়ে রওয়ানা দেন আমেরিকার উদ্দেশ্যে।
বইটি থেকে আমার সংগ্রহ করা কিছু তথ্য তুলে ধরছি-
– সাদা চামড়ার প্রথম যিনি নায়েগ্রা জলপ্রপাত দেখেন,তাঁর নাম জন লুইস হেনিপ্যান,খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচারক। ১৬৭৮ সালের ডিসেম্বরের কোন এক সকালে তিনি এ জলপ্রপাত আবিষ্কার করেন।
– জলপ্রপাতের পানি পড়ছে ১৬৭ ফুট উপর থেকে।
– “নায়েগ্রা” নামটি এসেছে “নায়া-গারা” থেকে,এর অর্থ “দেবতার গর্জন”।

– আমেরিকার একসেন্ট আর ব্রিটিশ একসেন্টের অনেক তফাতের একটি হচ্ছে ” টি” এর উচ্চারণ। আমেরিকানরা “টি” উচ্চারণ করেনা,ব্রিটিশরা করে।
যশোহা বৃক্ষের দেশে হুমায়ূন আহমেদ
– নাভাদা স্টেটে আছে মাহজি ডেজার্ট। মাহজি ডেজার্টেই পৃথিবী বিখ্যাত “ভ্যালি অব ডেথ”,মৃত্যুর উপত্যকা।
– এম.জি.এম গ্র্যান্ড হল পৃথিবীর সর্ববৃহৎ হোটেল।
– গ্র্যান্ড ক্যানিয়নকে বলা হয় পৃথিবীর সাত প্রাকৃতিক আশ্চর্যের প্রধান আশ্চর্য।
– গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে যাওয়ার পথে পাওয়া যায় অদ্ভুত এক অরণ্য,যেখানে পাওয়া যায় ” যশোহা বৃক্ষ”। এটি এক ধরনের দৈত্যাকৃতি ক্যাকটাস।
বইয়ে আমার প্রিয় কিছু লাইনঃ
– “আমরা যতক্ষণ একসঙ্গে থাকি তীব্র ভালোবাসা নিয়ে থাকি। মোটামুটি ধরনের ভালোবাসা নিয়ে চল্লিশ বছর পাশাপাশি বাস করার চেয়ে তীব্র ভালোবাসা নিয়ে চার বছর জীবনযাপন করা অনেক ভালো।”
– “আমাদের দেশের স্ত্রীরা যে স্বামীকে ছেড়ে মাঝে মাঝে চলে যান না তা না,তবে স্বামী অভাবে পড়েছে সেই কারণে কোনো স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছে- এটা প্রায় কখনোই ঘটে না।”
বইটিতে উনি উনার বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ এবং বিভিন্ন অভিজ্ঞতা আলাদা আলাদাভাবে বর্ণনা করেছেন। সাথে আছে উনার স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েদের নিয়ে নানা আনন্দঘন মূহুর্তের কথা।
বইটি পড়তে আমার দারুণ লেগেছে। নেভার নেভার ল্যান্ড ওরফে আমেরিকা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারলাম। ভ্রমণ কাহিনি বরাবরই আমায় টানে,সে টান থেকেই বইটি পড়ে ফেলা।
আমার মতো ভ্রমণপিয়াসু পাঠকেরা বইটি পড়ে নিতে পারেন।
( কৃতজ্ঞ =বই পর্যালোচনা,নবনীতা দত্ত তিথি ,,বইয়ের নামঃ যশোহা বৃক্ষের দেশে ,লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ )
শেষ কথা
মানুষের জীবনে অনেক উত্থান পতন রয়েছে, এই উত্থান পতন চরিত্রগুলো বইটিতে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে, সুখ দুঃখ হাসি কান্নার জীবনবোধগুলো লেখক তার লেখনীতে তুলে ধরেছে, পাঠক তার নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য এই বইয়ের উপদেশগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।