মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) অধীন থাকা ৬৩টি বেসরকারি কারিগরি প্রতিষ্ঠানকে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা হলেও, ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারে (ইএফটি) এসব প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করেনি মাউশি। ফলে ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না।
ভুক্তভোগী শিক্ষকরা জানিয়েছেন, ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত চার মাসের বেতনসহ ঈদ বোনাস ও বৈশাখী ভাতাও পাননি তাঁরা। চিঠি চালাচালি আর আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় তাঁরা চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন।
জানা গেছে, ১৯৯৫ সাল থেকে মাউশির অধীনে থাকা এসব কারিগরি প্রতিষ্ঠান পরে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে ধাপে ধাপে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে স্থানান্তর করা হয়। সর্বশেষ ৬৩টি প্রতিষ্ঠান মাউশির অধীনে থেকে যায় এবং তাদের বেতন-ভাতা দিত মাউশি। ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে ইএফটি চালু হলে এই ৬৩টি প্রতিষ্ঠানকে বাদ রাখা হয়, ফলে বেতন বন্ধ হয়ে যায়।
বিভিন্ন দপ্তরে তালিকা পাঠানো, চিঠি চালাচালির মাঝেই চলে গেছে চার মাস। এ সময় অর্থ মন্ত্রণালয় বেতন দিতে নির্দেশ দিলেও অধিদপ্তরগুলোর মধ্যে সমন্বয় না থাকায় সমস্যার সমাধান হয়নি।২০ এপ্রিল কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে দেখা করেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা। তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন জানিয়ে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, মাউশি শুধু প্রতিষ্ঠানের তালিকা দিয়েছে, শিক্ষকদের তথ্য দেয়নি। ফলে বেতন প্রদানে বিলম্ব হচ্ছে। বাজেট বরাদ্দ না থাকায় তা মন্ত্রণালয় থেকে চাওয়া হবে।
তবে অর্থ মন্ত্রণালয় সংসদের অনুমোদন ছাড়া এক দপ্তরের বাজেট অন্য দপ্তরে স্থানান্তরের অনুমতি না থাকায় জটিলতা বেড়েছে। বাজেট বরাদ্দের পরই শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে কারিগরি অধিদপ্তর। এই পরিস্থিতিতে চার মাস ধরে বেতনহীন মানবেতর জীবনযাপন করছেন শিক্ষকরা। দ্রুত সমাধান না হলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনাও ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।