নারী সাহাবীদের আদর্শ মাওলানা আব্দুস সালাম নদবী রহিমাহুল্লাহ বুক রিভিউ সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো, এ মহান লেখকের বইটি জীবন বাস্তবতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার জন্য ‘ নারী সাহাবীদের আদর্শ মাওলানা আব্দুস সালাম নদবী রহিমাহুল্লাহ বুক রিভিউ ‘ বইটি পড়ে আমাদের পারিবারিক সামাজিক জীবন রীতির জন্য যে উপদেশ নামা দেওয়া আছে সেগুলো জেনে আমাদের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সহজ হবে।
নারী সাহাবীদের আদর্শ মাওলানা আব্দুস সালাম নদবী বুক রিভিউ
জনপ্রিয় এই বুড়িগঙ্গা টিভি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘ নারী সাহাবীদের আদর্শ মাওলানা আব্দুস সালাম নদবী রহিমাহুল্লাহ বুক রিভিউ ‘ সম্পর্কে অল্প কথায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে,
পাঠকের বুক রিভিউটি, এবং লেখককের দূরদর্শী সম্পূর্ণ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে, বুক রিভিউটি তে তথ্যবহুল আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বুক রিভিউ
নারীরা হলো ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তোলার ভীত। নারীদের নিবিড় পরিচর্যায় বেড়ে উঠে আমাদের সমাজ। যে সমাজের নারী যত বেশি শিক্ষিত ও দ্বীনদার সেই সমাজ তত বেশি উন্নত। কিন্তু বর্তমানের সমাজের নারীরা শিক্ষিত হলেও দ্বীন সম্পর্কে উদাসীন। তাই সমাজকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চাইলে নারীদের দ্বীনের পথে ফিরিয়ে আনা অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর এই দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে জানার সবথেকে গুরুত্বপূর্ন পদ্ধতি হলো নারী সাহাবীদের অবস্থা জানা।
মুসলিম নারীদের নারী সাহাবীদের আদর্শ জানানোর জন্য মাওলানা আব্দুস সালাম নদবি রহিমাহুল্লাহ’র অসাধারণ সৃষ্টি ” নারী সাহাবীদের আদর্শ” বইটি বাংলা অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইমদাদুল্লাহ। এই বইটিতে তিনি নারী সাহাবীদের ইবাদত, আর্থিক লেনদেন, ঈমান, আখলাক এবং সামাজিক কর্মনীতিসহ যাবতীয় বিষয় খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন

◽বই নির্যাস :
লেখকের ধারাহিক আলোচনাকে এখানে ১২ টি অধ্যায়ে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রত্যেক অধ্যায়ে একাধিক পরিচ্ছেদও রয়েছে। নিচে এর বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
🔹 ১ম অধ্যায় – ইসলাম গ্রহণ :
এখানে নারী সাহাবীদের ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা, কষ্ট সহ্যকরণ ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
🔹 ২য় অধ্যায় – আকিদা-বিশ্বাস :
এই অধ্যায়ে একত্ববাদ বা তাওহীদ, শিরক থেকে প্রত্যাবর্তন ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নবুওয়াতের বিশ্বাস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
🔹 ৩য় অধ্যায় – ইবাদত :
নামাজ, জামাতের সাথে নামাজ আদায়, জুমার দিন, ইশরাক নামাজ, তাহাজ্জুদের নামায, যাকাত ও সদকা, আত্মীয় -স্বজনদের সদকা দেওয়া, মুখাপেক্ষী ব্যাক্তির প্রয়োজন পূরণ, রোযা বা সিয়াম, মৃতদের পক্ষ থেকে রোযা রাখা,এতেকাফ, হজ্জ পালন, পিতা মাতার পক্ষ থেকে হজ্জ পালন, উমরা আদায়, শহীদ হওয়ার আগ্রহ অভিলাষ ও কুরআন অনুযায়ী আমল সম্পর্কিত আলোচনা রয়েছে এই অধ্যায়ে।
🔹 ৪র্থ অধ্যায় – শরয়ী নিষিদ্ধ বিষয় বর্জন :
এই অধ্যায়ে বাঁশি বর্জন ও সন্দেহপূর্ণ বিষয় বর্জন সম্পর্কিত আলোচনা রয়েছে।
🔹 ৫ম অধ্যায় – ধর্মীয় জীবনের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য :
এই অধ্যায়ে তাসবিহ,তাহলীল , পবিত্র স্থান জিয়ারত , দ্বীনি দায়িত্ব সম্পাদনে শারীরিক কষ্ট সহ্য করণ সম্পর্কিত আলোচনা করা হয়েছে।
🔹 ৬ষ্ঠ অধ্যায় – রাসূলের আনুগত্য ও তার ভালোবাসা :
এই অধ্যায়ে বরকত গ্রহণ, রাসূলের স্মৃতিমাখা বস্তুর সংরক্ষণ, রাসূলের আদব বজায় রাখা, রাসূলুল্লাহর প্রতিরক্ষা , রাসূলের খেদমত ও সেবা, রাসূলের ভয়, রাসূলের প্রশংসা, রাসূলের আদেশ পালন, রাসূলের সন্তুষ্টি অন্বেষণ, রাসূলের জন্য নিজেকে সোপর্দ করা, রাসূলকে মেহমানদারী করানো, রাসূলের মহব্বত, রাসূল থেকে উপকৃত হওয়ার আগ্রহ ইত্যাদি বিষয়ে আলোপাত করা হয়েছে।
🔹 ৭ম অধ্যায় – উন্নত চরিত্রসমূহ :
এই অধ্যায়ে নারী সাহাবীদের আত্মসম্মানবোধ, লজ্জা ও শরম, নিঃস্বার্থ অগ্রাধিকার, বদান্যতা, প্রতিপক্ষ থেকে প্রতিশোধ না নেওয়া, আতিথেয়তা, ধৈর্য্য আর অবিচলতা, বীরত্ব ও সাহসিকতা, অনাড়ম্বর এবং সংযমী জীবন – যাপন, অন্তরের স্বাচ্ছন্দ্য, গোপনীয়তা রক্ষা, সচ্চরিত্রতা ও সততার সংরক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
🔹 ৮ম অধ্যায় – মহত্তম আচরণ – শিষ্টাচার:
এই অধ্যায়ে নারী সাহাবীদের সম্পর্কের পুনঃস্থাপন, আত্মীয়তা রক্ষা, হাদীয়া প্রদান, সেবকদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার, পারস্পরিক সাহায্য – সহযোগিতা, রোগী দেখতে যাওয়া, অসুস্থ ব্যক্তির সেবা, শোক প্রকাশ, সন্তানের প্রতি ভালোবাসা, ভাই – বোনের প্রতি মহব্বত – আন্তরিকতা, পিতা – মাতার প্রতিরক্ষা, এতিম প্রতিপালন, স্বামীর সন্তুষ্টি অন্বেষণ, স্বামীর প্রতি মহব্বত ও ভালোবাসা এবং স্বামীর সেবা সম্পর্কিত আলোচনা রয়েছে।
🔹 ৯ম অধ্যায় – জীবন-যাপন পদ্ধতি :
এই অধ্যায়ে নারী সাহাবীদের পোশাক – পরিচ্ছদ , ঘর – বাড়ি, গৃহ সামগ্রী, অলংকার, আরাম আয়েশের সামগ্রী, নিজ কর্ম নিজে করা এবং পর্দা সম্পর্কিত আলোচনা রয়েছে।
🔹 ১০ম অধ্যায় – আর্থিক লেনদেন :
এই অধ্যায়ে নারী সাহাবীদের ঋণ পরিশোধে যত্নবান, ঋণের কিছু অংশ ক্ষমা করে দেওয়া, সম্পদ বণ্টনে আল্লাহভীতি সম্পর্কিত আলোচনা রয়েছে।
🔹 ১১তম অধ্যায় – নারী সাহাবীগণের অবদান :
এই অধ্যায়ে নারী সাহাবীদের ইসলাম প্রচার, নও-মুসলিমদের দায়িত্বগ্রহণ, মুজাহিদের সেবা, মসজিদের সেবা, বিদয়াত এর মূলোৎপাটন, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ, পাশা খেলা, মাদক ও কৃত্রিম চুল ব্যাবহারে নিষেধাজ্ঞা, তাফসীর , হাদীস ও ফিকহ শাস্ত্রে নারী সাহাবীদের অবদান রাখার বিষয়ে আলোচনা রয়েছে।
🔹 ১২তম অধ্যায় – নারী সাহাবীদের কৃতিত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কিত আলোচনার মাধ্যমে বইটির ইতি টানা হয়েছে।
◽ পাঠ্যানুভূতি :
“নারী সাহাবীদের আদর্শ” বইটি অসাধারণ একটি শিক্ষণীয় ও অনুপ্রেরণামূলক বই। বইটি অত্যন্ত সহজ সাবলীল ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বইটির প্রতিটি পাতায় পাতায় নারী সাহাবীদের আদর্শ, ব্যাবহার ও জীবনাচার সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।বইটি যতই পড়ি ততই যেন আমার ভালোলাগা শেষ ই হচ্ছিল না। আশা করি, বইটি পড়ে পাঠক বিরক্ত বোধ করবে না ইনশা আল্লাহ।
◽বইটি কাদের জন্য ও কেন পড়বেন:
বইটি মূলত সব বয়সী মেয়েদের জন্য পড়া প্রয়োজন।এছাড়া পুরুষরাও এই বই পড়তে পারবেন। বইটি পড়ার মাধ্যমে একজন পাঠক খুব সহজেই নারী সাহাবীদের আদর্শ ও ইসলামের ক্ষেত্রে তাদের অবদান সম্পর্কে জানতে পারবেন।
( কৃতজ্ঞ =বই পর্যালোচনা,মোহাম্মদ ইমদাদুল্লাহ , বইয়ের নামঃ নারী সাহাবীদের আদর্শ
, লেখকঃমাওলানা আব্দুস সালাম নদবী রহিমাহুল্লাহ)
শেষ কথা
মানুষের জীবনে অনেক উত্থান পতন রয়েছে, এই উত্থান পতন চরিত্রগুলো ‘ নারী সাহাবীদের আদর্শ মাওলানা আব্দুস সালাম নদবী রহিমাহুল্লাহ বুক রিভিউ ‘ বইটিতে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে, সুখ দুঃখ হাসি কান্নার জীবনবোধগুলো লেখক তার লেখনীতে তুলে ধরেছে, পাঠক তার নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য এই বইয়ের উপদেশগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।