দি কসমিক প্লে অব কন্টেম্পোরারি গ্লোবাল পলিটিক্স মোহাম্মাদ মিরাজ মিয়া বুক রিভিউ সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো, এ মহান লেখকের বইটি জীবন বাস্তবতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার জন্য বইটি পড়ে আমাদের পারিবারিক সামাজিক জীবন রীতির জন্য যে উপদেশ নামা দেওয়া আছে সেগুলো জেনে আমাদের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সহজ হবে।
দি কসমিক প্লে অব কন্টেম্পোরারি গ্লোবাল পলিটিক্স মিরাজ মিয়া
জনপ্রিয় এই বুড়িগঙ্গা টিভি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সম্পর্কে অল্প কথায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে,পাঠকের বুক রিভিউটি, এবং লেখককের দূরদর্শী সম্পূর্ণ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে, বুক রিভিউটি তে তথ্যবহুল আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
মিরাজ মিয়া বুক রিভিউ
১৫ টা অধ্যায়ে বিভক্ত এই বইতে অত্যন্ত সুন্দর আর সহজ ভাষায় সমসাময়িক বৈশ্বিক রাজনীতির বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত বিভিন্ন পরিভাষা সহজ ভাবে বুঝিয়ে দেয়ার পাশাপাশি প্রয়োগ টা সুন্দর ভাবে দেখানো হয়েছে।
যদিও বই টি প্রকাশের দিন ই কিনেছিলাম কিন্তু পড়লাম এত্ত দিন পরে এসে। তবে মনে হল বইখানা সমসাময়িক বিশ্বরাজনীতির ঘটনা গুলো একেবারে ক্লিয়ার করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।
বইয়ের লেখক ছোট ভাই মিরাজ মিয়ার লিখা প্রথম বই “এনাটমি অব ওয়াল্ড পলিটিক্স” বইখানা থেকেই তার বড় ফ্যান হয়ে গেছিলাম। বৈশ্বিক রাজনৈতিক ব্যাপার স্যাপার বুঝতে এর চেয়ে সহজ ভাষায় এরচেয়ে ভাল বই আর আমার চোখে পড়েনি।
বইটির ১৫ টি অধ্যায়ের সংক্ষিপ্ত বিবরণ :
প্রথম অধ্যায়:
“পরিবর্তিত বিশ্বব্যবস্থা: গ্রেকো-রোমান থেকে সামসময়িক বিশ্ব” তে সেই গ্রীক-রোমান সাম্রাজ্য থেকে মধ্যযুগ পেড়িয়ে বর্তমান সময় পর্যন্ত রাজনীতির হালচালের ধরন স্পষ্ট করা হয়েছে।
দ্বিতীয় অধ্যায়:
সম্ভাব্য বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মহানন্দার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ এর অবস্থা,উত্তরণের উপায় তুলে ধরা হয়েছে।
তৃতীয় অধ্যায়:
রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট: বিকাশ, নিষেধাজ্ঞা ও মূল্যায়ন বিষয় গুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
চতুর্থ অধ্যায়:
রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ ফুটিয়ে তুলা হয়েছে।
পঞ্চম অধ্যায়:
চলমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আইএমএফ ও বাংলাদেশের ঋণ বিষয় টি দারুন ভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

দি কসমিক প্লে অব কন্টেম্পোরারি গ্লোবাল পলিটিক্স বুক রিভিউ
ষষ্ঠ অধ্যায়:
ওপেক প্লাসঃ সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের নতুন দিক তুলে ধরা হয়েছে। যদিও বর্তমানে এই জল আরো অনেক দূর গড়িয়ে এসেছে। বইতে নভেম্বর পর্যন্ত ঘটনা ই ফুটে এসেছে।
সপ্তম অধ্যায়:
সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা: ইউরেশিয়া অঞ্চলের নতুন সম্ভবনা সম্পর্কে দারুন ভাবে ফুটিয়ে তুলা হয়েছে।
অষ্টম অধ্যায়:
তাইওয়ান: চীন-যুক্তরাষ্ট্রের নয়া দ্বৈরথ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তবে এই জল আরো ঘোলাটে হচ্ছে দিন দিন।
নবম অধ্যায়:
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি: নির্ধারক, বৈশিষ্ট্য ও অর্জন অধ্যায় টি খুব ভাল লেগেছে। এখানে সুন্দর ভাবে বাংলাদেশের শক্তি, সক্ষমতা, করণীয় কেন এরকম সেটা ফুটিয়ে তুলা হয়েছে।
দশম অধ্যায়:
বাংলাদেশ-রাশিয়া সম্পর্ক উন্নয়ন: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ গুলো খুব ই ইতিবাচক ভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
একাদশ অধ্যায়:
বাংলাদেশ-সৌদি সম্পর্ক: সম্ভাবনা ও করণীয় সম্পর্কে দারুন কিছু ব্যাপারে আলোকপাত করা হয়েছে।
দ্বাদশ অধ্যায়:
একুশ শতকের বিশ্ব রাজনীতিতে তুরষ্ক অধ্যায়ের আলোচনা এই সময়ে এসে যদিও একটু পুরাতন লেগেছে তবে আগাগোড়া ভালভাবে জানতে অধ্যায় টা খুব কাজে দিবে।
ত্রয়োদশ অধ্যায়:
মিয়ানমারের রাজনৈতিক ইতিহাস ও ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পাশাপাশি বাংলাদেশের সাথে তাদের কেন মিলেনা সেটাও স্পষ্ট করা হয়েছে।
চতুর্দশ অধ্যায়:
দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের ভূমিকা, নেতৃত্ব, অবস্থান ও সম্ভাবনা বিষয় টি সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এই অধ্যায় টা আসলেই অনেক কিছু নতুন করে ভাবতে শিখাবে।
পঞ্চদশ অধ্যায়:
সমসাময়িক বিশ্বরাজনীতিতে ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা নিয়ে একটা ধারনা দেয়া হয়েছে।
কোন অধ্যায়ে কি বলা হয়েছে সেটা তো বললাম। এবার আরেকটা কথা বলি, আমার মতো আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়া যাদের আগ্রহ আছে তাদের জন্য শতভাগ রিকমেন্ডেশন থাকল এই বই টা পড়ার জন্য। অধ্যায় ভিত্তিক বিবরণ থেকেই সেটা জোর দিয়ে বলা যায় কেন বইটি এতো হাইলি রিকমেন্ডেড।
যারা নিয়মিত পেপার পত্রিকা পড়েন, নতুন নতুন অনেক হালচাল দেখেন আন্তর্জাতিক খবরের পাতায় তাদের জন্য বই টা গুছানো মনে হবে কারন এখানে সহজ ভাবে সব ঘটনা সুন্দর ভাবে দেওয়া হয়েছে।
পরিশেষে শেষে বইটির লেখক মোহাম্মদ মিরাজ মিয়াকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এতো সহজ, সরল ও সাবলীল ভাষায় বৈশ্বিক রাজনীতির বিষয় গুলো এক মলাটে আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য।
( কৃতজ্ঞ = বুক রিভিউ তোহিদুর রহমান,বইয়ের নাম :দি কসমিক প্লে অব কন্টেম্পোরারি গ্লোবাল পলিটিক্স , লেখক: মোহাম্মাদ মিরাজ মিয়া)
শেষ কথা
মানুষের জীবনে অনেক উত্থান পতন রয়েছে, এই উত্থান পতন চরিত্রগুলো বইটিতে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে, সুখ দুঃখ হাসি কান্নার জীবনবোধগুলো লেখক তার লেখনীতে তুলে ধরেছে, পাঠক তার নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য এই বইয়ের উপদেশগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।