তন্দ্রাবিলাস হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো, এ মহান লেখকের বইটি জীবন বাস্তবতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার জন্য ‘ তন্দ্রাবিলাস হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ ‘ বইটি পড়ে আমাদের পারিবারিক সামাজিক জীবন রীতির জন্য যে উপদেশ নামা দেওয়া আছে সেগুলো জেনে আমাদের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সহজ হবে।
তন্দ্রাবিলাস হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ
জনপ্রিয় এই বুড়িগঙ্গা টিভি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘ তন্দ্রাবিলাস হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ ‘ সম্পর্কে অল্প কথায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে,পাঠকের বুক রিভিউটি, এবং লেখককের দূরদর্শী সম্পূর্ণ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে, বুক রিভিউটি তে তথ্যবহুল আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বুক রিভিউ
হুমায়ূন আহমেদ (১৩ নভেম্বর ১৯৪৮–১৯ জুলাই ২০১২) ছিলেন একজন বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক বলে গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক।
“তন্দ্রাবিলাস” তার মিসির আলী চরিত্রভিত্তিক উপন্যাসগুলোর মধ্যে ১১ নম্বর।
এক শীতের সকালে মিসির আলীর কাছে আসে এক অদ্ভুত ধরনের মেয়ে। মেয়েটি তার নাম সায়েরা বানু বললেও মিসির আলী তার মিথ্যে বলাটা ধরে ফেলেন। মেয়েটি যাবার আগে খুব অদ্ভুতভাবে মিসির আলীর কাছে তার স্যুটকেস এবং হ্যান্ডব্যাগ রেখে যায়।
মেয়েটির স্যুটকেস থেকে মিসির আলী উদ্ধার করেন মেয়েটির লেখা চিঠি।

দামী ওনিয়ন স্কিন পেপারে লেখা চিঠি পড়ে মিসির আলী জানতে পারেন, মেয়েটার নাম ফারজানা, বয়স ২৩। সে ছোটবেলাতে এক রোড এক্সিডেন্টে তার মাকে হারায়। তার বাবা দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন,যাকে সে ছোট মা ডাকত। ঘটনাচক্রে তার ছোট মা আত্মহত্যা করে।
ফারজানার অনেকগুলো ডাক নাম ছিল।তার অন্যান্য নামগুলো হল চিত্রা, নিশী।
তন্দ্রাবিলাস হুমায়ূন আহমেদ
ছোট মা মারা যাওয়ার পরই ফারজানার সাথে অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে থাকে। প্রায়ই সে তার মৃত ছোট মা কে দেখতে পায়। তার সাথে কথা বলে, খেলাধুলা করে। কিন্তু এই বিষয়টা সে কাউকে বলেনা।
ফারজানার ভাষ্যমতে সে অদ্ভুত ক্ষমতার অধিকারী। সে যা স্বপ্ন দেখে তাই সত্য হয়। এমনকি সে চাইলে স্বপ্ন পরিবর্তন করতে পারে।
পরবর্তীতে ফারজানার বাবা আবার বিয়ে করেন। সে তার বাবার তৃতীয় স্ত্রীকে নীতু আন্টি বলে ডাকতো।
নীতু আন্টির সাথে তার বাবার বিয়ের পর তিনি ফারজানার সঙ্গী হিসেবে শরীফা নামে এক কাজের লোক নিয়ে আসেন। যার সাথে ফারজানার একরকম সখ্যতা গড়ে উঠে।
একসময় শরীফার বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু বিয়ের পর স্বামীর সাথে চলে যাওয়ার আগের সন্ধ্যায় শরীফার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটে। সবাই এতে ফারজানাকেই সন্দেহ করে। এরপর থেকেই ফারজানা শরীফার অশরীরি অবয়বকে খাটের নিচে দেখতে পায়।
এমনকি ফারজানার নীতু আন্টিও দেখতে পান যার ফলে উনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে।
মিসির আলী ফারজানার সমস্যা ধরে ফেলেন এবং তার সাথে দেখা করতে তার বাসায় যান।
রাতের খাবার খাওয়ার আগে মিসির আলি ফারজানাকে তার সমস্যার কথা খুলে বলেন। তিনি বলেন, “ফারজানার জীবন কাটছে এক তন্দ্রার মধ্যে, যে জগতটা খুব ভয়াবহ রকমের অসুন্দর।”
ফারজানার জীবনের রহস্য ধরে ফেলেন মিসির আলী কিন্তু তার সমাধান যদি কেউ করতে পারে তাহলে সেটা একমাত্র ফারজানা। ফারজানা কি পারে সমাধান করতে???
আমার পছন্দের কিছু লাইন-
– “মানুষের অনেক অদ্ভুত ক্ষমতার একটি হচ্ছে মিথ্যা বলার ক্ষমতা। কল্পনা শক্তি আছে বলেই সে মিথ্যা বলতে পারে।”
– “যারা গম্ভীর ধরনের মানুষ তাদের হাসি খুব সুন্দর হয়। এরা হঠাৎ হঠাৎ হাসে তো এই জন্যে। আর যারা সবসময় হাসিমুখে থাকে তাদের হাসি হয় খুব বিরক্তিকর। তাদের কান্না হয় সুন্দর।”
– “একবার তাঁর ইচ্ছে হল নিজের হাতে মেয়েটির চোখের জল মুছে দেন- পর মুহূর্তেই মনে হল- না, নিশির চোখের জল মুছিয়ে দেবার দায়িত্ব তাঁর না। তাঁর দায়িত্ব জলের উৎস মুখ খুঁজে বের করা।”
( কৃতজ্ঞ =বই পর্যালোচনা,নবনীতা দত্ত তিথি, বইয়ের নামঃ তন্দ্রাবিলাস , লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ )
শেষ কথা
মানুষের জীবনে অনেক উত্থান পতন রয়েছে, এই উত্থান পতন চরিত্রগুলো ‘ তন্দ্রাবিলাস হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ ‘ বইটিতে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে, সুখ দুঃখ হাসি কান্নার জীবনবোধগুলো লেখক তার লেখনীতে তুলে ধরেছে, পাঠক তার নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য এই বইয়ের উপদেশগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।