জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দর্শন বিভাগের উদ্যোগে এবং ফিলোসফি কালচারাল ক্লাবের আয়োজনে শুরু হয়েছে চার দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য উৎসব ‘ফিলো কার্নিভাল ১.০’।
“Celebrating Art & Culture” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত এ উৎসবে যুক্তি, কল্পনা ও সৃজনশীলতা মিলেমিশে তৈরি করেছে এক প্রাণবন্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশ। দর্শনচর্চাকে প্রাণবন্ত করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল বিকাশে ভূমিকা রাখতেই এই ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন।
উৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় ৭ জুলাই, সোমবার ইনডোর গেমসের মাধ্যমে। দর্শন বিভাগের পঞ্চম তলায় আয়োজিত লুডু, দাবা, ক্যারাম ও টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতাগুলোর মাধ্যমে উৎসবের প্রারম্ভিক দিনেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দ, উত্তেজনা ও বন্ধন সৃষ্টি হয়।
উৎসবের উদ্বোধন করেন ফিলোসফি কালচারাল ক্লাবের মডারেটর এবং দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ জসিম খান। তিনি বলেন, “শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে শিক্ষার্থীদের বহুমাত্রিক বিকাশের জন্য এমন আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খেলাধুলা, সংস্কৃতি এবং দর্শনচর্চা একত্রে মিলে একজন শিক্ষার্থীর মধ্যে যে মানবিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক গুণাবলি তৈরি করে, ফিলো কার্নিভাল তারই একটি বাস্তব প্রয়াস।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, “ফিলো কার্নিভাল শুধু আনন্দের আয়োজন নয়, এটি দর্শনের প্রাণবন্ত চর্চার একটি উৎকৃষ্ট মাধ্যম। এ ধরনের আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে চিন্তাশীলতা, সংবেদনশীলতা ও পারস্পরিক সহযোগিতার মানস গড়ে তোলে। আমরা চাই, এ উদ্যোগ নিয়মিত হোক এবং অন্যান্য বিভাগেও এমন আয়োজন ছড়িয়ে পড়ুক।”
আগামী ১০ জুলাই পর্যন্ত চলবে এ আয়োজন। দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠিত হবে আউটডোর গেমসের অংশ হিসেবে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ, যেখানে দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা দলবেঁধে অংশগ্রহণ করবে। তৃতীয় দিনে থাকবে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, যেখানে গান, কবিতা আবৃত্তি, নাটক, নাচ, চিত্রাঙ্কন ও কমেডি পরিবেশনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রতিভা প্রকাশ করবে। চতুর্থ ও শেষ দিনে অনুষ্ঠিত হবে “থিম ডে” এবং সমাপনী অনুষ্ঠান। এদিন থাকবে থিম ওয়াক, পুরস্কার বিতরণ, বিশেষ পরিবেশনা, লাইভ ব্যান্ড শো ও এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা।
ফিলোসফি কালচারাল ক্লাবের সভাপতি সাফা আক্তার নোলক বলেন, “দর্শন বিভাগে এই ধরনের উৎসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে উষ্ণ সম্পর্ক, পারস্পরিক সহানুভূতি ও আত্মবিশ্বাস তৈরি করে তা অনন্য। ফিলো কার্নিভাল ১.০ শুধু একটা আয়োজন নয়, এটা আমাদের ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি, আমাদের ঐক্যের প্রকাশ।”
ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাত্রি বিশ্বাস বলেন, “আজকের শিক্ষার্থীরা শুধু পাঠ্যক্রমে নয়, শিল্প, সংস্কৃতি ও দর্শনচর্চার মধ্য দিয়েই মননের বিকাশ ঘটায়। এই আয়োজন সেই সম্ভাবনাগুলোকে উন্মুক্ত করার একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে সবাই নিজের প্রতিভাকে তুলে ধরতে পারে।”
উৎসবটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত। আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা করছে দর্শন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।