কাঁদো নদী কাঁদো সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বুক রিভিউ সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো, এ মহান লেখকের বইটি জীবন বাস্তবতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার জন্য ‘ কাঁদো নদী কাঁদো সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বুক রিভিউ ‘ বইটি পড়ে আমাদের পারিবারিক সামাজিক জীবন রীতির জন্য যে উপদেশ নামা দেওয়া আছে সেগুলো জেনে আমাদের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সহজ হবে।
কাঁদো নদী কাঁদো সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বুক রিভিউ
জনপ্রিয় এই বুড়িগঙ্গা টিভি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘ কাঁদো নদী কাঁদো সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বুক রিভিউ ‘ সম্পর্কে অল্প কথায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে,পাঠকের বুক রিভিউটি, এবং লেখককের দূরদর্শী সম্পূর্ণ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে, বুক রিভিউটি তে তথ্যবহুল আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বুক রিভিউ
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বাংলা সাহিত্যের একজন অসামান্য কথাশিল্পী। চেতনায় এমনকি সার্বিক দিক থেকে তার উপন্যাস জীবনবাদী। কাঁদো নদী কাঁদো তেমনই একটি উপন্যাস। এটি প্রকাশিত হয় ১৯৬৮ সালে। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ এখানে দেখিয়েছেন যে একটা নদীর উপর কত মানুষের জীবন জীবিকা নির্ভর করে। তিনি আরও দেখিয়েছেন যে একটা নদী মানুষের দুঃখে-কষ্টে, মানুষের অসহাত্বে অনবরত কেঁদেই চলেছে। এই কান্না কেউ শুনতে পায় না।সে কাঁদে বিভিন্ন কণ্ঠে, বিভিন্ন সুরে, বিভিন্ন ঢংয়ে। এই জন্যই মনে হয় লেখক এর নাম দিয়েছেন “কাঁদো নদী কাঁদো “।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ দেখিয়েছেন যে একটা মিথ্যা সান্ত্বনা ও আশ্বাস মানুষের জীবন কে কোথায় নিয়ে যায়। এই উপন্যাসের মূল চরিত্র মুস্তাফা মনোয়ার। তার বাবা খেদমতুল্লাহ। খেদমতুল্লাহর বোন সাত বছর বয়সে বিধবা হন। তখন তার সাত বয়সের একটা মেয়ে ছিল। নাম খোদেজা। খেদমতুল্লাহ তার বোন কে কথা দিয়েছিলেন যে, বড় হলে খোদেজার সাথে মোস্তফা মনোয়ারের বিয়ে দিবেন। খোদেজা সে কথা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে নিয়ে ছিল এবং মোস্তফা মনোয়ার কে স্বামী হিসেবে লালন করতে থাকে সেই ছোট বেলা থেকে। কিন্তু মোস্তফা মনোয়ার থাকে কখনও বাগদাত্ত ভাবে নি।
তবে তার আচরণে তা একটুও চাপ কাটে নি। তিনি যখন বাড়িতে আসতেন তখন তিনি কারও জন্য কিছু না আনলেও খোদেজার জন্য চুড়ি, ফিতা,কানের দুল ইত্যাদি নিয়ে আসতেন। তার আসার খবর পেয়ে তিনি সারাক্ষণ উদ্বীগ্ন থাকতেন। যখন চলে যেতেন তখন বিষন্নতায় ছেয়ে যেত থাকে। মোস্তফা মনোয়ার চাকুরী করতেন কুমারডাঙ্গায় আর সেখানেই এক মেয়ের সাথে তার ভাব বিনিময় শুরু হয় এবং অবশেষে বিয়ে এসে গড়ায়। তিনি ভুলেই যান তার বাবার প্রতিশ্রুতির কথা। এক দিন তিনি তার বিয়ের বিষয়ে একটা চিঠি লিখেন আর চিঠি বাড়িতে পৌঁছার পরেই ঘটে যায় এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। খোদেজা এটা মানতে না পেরে সে চলে যান না ফেরার দেশে

কাঁদো নদী কাঁদো বুক রিভিউ
কাঁদো নদীর কাহিনী গড়ে উঠেছে মূলত বাঁকাল নদী ও কুমারডাঙ্গাকে কেন্দ্র করে। বাঁকাল নদীতে চড় পড়ার কারণে নদীতে ষ্টীমার চলাচল বন্ধ থাকে। মানুষ যাতায়াত করতে পারে না। এবং ক্ষুদ্র এই মফস্বল শহরটি বহির্বিশ্ব থেকে আলাদা হয়ে পড়ে। এতে জন জীবন উপর চাপ পড়ে। কেননা তাদের জীবন চলমান নদীর মতই। চড় পড়ার কথাটি প্রথমে শহরের প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ গন বিশ্বাস করে নি। কারণ কোন কিছু না দেখে তারা বিশ্বাস করতে চায় না।
কুমারডাঙ্গা গ্রামের মানুষ গুলো ছিল যাযাবর এবং চরম হিংসুটে। তাদের মধ্যে মারামারি হানাহানি সব সময় লেগেই থাকত। নিজের নাক কেটেও তারা পরের ক্ষতি করার জন্য প্রস্তুত থাকত।এক সময় বাঁকাল নদীর পানি শুকিয়ে যায় এবং কুমারডাঙ্গা গ্রামের মানুষের মধ্যে শুরু হয় এক হাহাকার ।নদীর উপর নির্ভর করা মানুষ গুলোর জীবনে নেমে আসে এক ভয়াবহ দূ্বির্ষহ। তাদের মধ্যে বেঁচে থাকার জন্য শুরু হয় এক মরণ প্রাণ যুদ্ধ আর অভিনব সংগ্রাম।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ আর দেখিয়েছেন যে মুছলেহউদ্দীনের মেয়ে সকিনা এক ধরনের অদ্ভুত কান্না শব্দ শুনতে পান।যা মানুষকে বিচলিত ও আতঙ্কিত করেছিল। পরে তারা বুঝতে পারে যে এটা বাঁকাল নদীরই কান্না। এটা হচ্ছে মৃত্যু পথযাত্রী একটি নদীর আর্তনাদ 😐
( কৃতজ্ঞ = বুক রিভিউ, হৃদয় চৌধুরী, বইঃ কাঁদো নদী কাঁদো লেখকঃসৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ)
শেষ কথা
মানুষের জীবনে অনেক উত্থান পতন রয়েছে, এই উত্থান পতন চরিত্রগুলো ‘ কাঁদো নদী কাঁদো সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বুক রিভিউ ‘ বইটিতে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে, সুখ দুঃখ হাসি কান্নার জীবনবোধগুলো লেখক তার লেখনীতে তুলে ধরেছে, পাঠক তার নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য এই বইয়ের উপদেশগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।