কষ্ট নিয়ে ইসলামিক উক্তি সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত ব্যাখ্যা করব, আমাদের সফল মনীষী ও মহান ব্যক্তিদের দৃষ্টিভঙ্গি মূলত এখানে তুলে ধরা হয়েছে, ব্যক্তিগত সামাজিক জীবনের উত্থান পতন নিয়েই মহান মনীষীরা আমাদেরকে ‘কষ্ট নিয়ে ইসলামিক উক্তি’ বিষয়ে বিস্তারিত বলেছেন। এগুলো জেনে পারিবারিক এবং সামাজিকভাবে আমাদের জীবনে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সফলতার শীর্ষে পৌঁছাতে পারি।
কষ্ট নিয়ে ইসলামিক উক্তি
জনপ্রিয় এই বুড়িগঙ্গা টিভি ওয়েবসাইটে থেকে এখন আমরা জেনে নেব মহান মনীষী ও সফল ব্যক্তিরা কি বলেছেন ‘কষ্ট নিয়ে ইসলামিক উক্তি’ সম্পর্কে।
“ওয়ালাসরি, ইন্নাল ইনসানা লাফি খুসর।” (সূরা আল-আসর, 103:2-3)
“অবশ্যই, মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে।” (বলা হচ্ছে যে, শুধু যারা ঈমান আনে, সৎকর্ম করে এবং একে অপরকে সত্য এবং ধৈর্যের প্রতি নির্দেশ করে, তারাই মুক্তি পাবে।)
“ইন্না মাআল উসরি উসরা।” (সূরা আশ-শারহ, 94:6)
ইসলামিক উক্তি
“অবশ্যই, কষ্টের সাথে একটি সহজতাও আছে।”
“যে কেউ আল্লাহর জন্য ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহ তার জন্য সহায়ক হন।” (হাদীস)
এই হাদীসে বলা হয়েছে যে, কষ্টের সময় ধৈর্য ধারণ করলে আল্লাহ সহায়তা করবেন।
“আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘আমার বান্দা যদি আমি যা চাই তা গ্রহণ না করে, তাহলে আমি তাকে একটি ভাল কিছু দেব।'” (হাদীস)
এখানে বলা হয়েছে যে, আল্লাহর সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া, আমাদের জন্য কল্যাণকর হতে পারে।
“মুসিবাহ (কষ্ট) আসলে একটা পরীক্ষার অংশ।” (হাদীস)
কষ্ট এবং পরীক্ষার মাধ্যমে মানুষের শক্তি এবং ঈমানের মান যাচাই করা হয়।
“ইন্না মাআল উসরি উসরা।” (সূরা আশ-শারহ, 94:6)
“অবশ্যই, কষ্টের সাথে একটি সহজতাও আছে।”
“ওয়ালাসরি, ইন্নাল ইনসানা লাফি খুসর।” (সূরা আল-আসর, 103:2-3)
“অবশ্যই, মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে।”
“ইননাল্লা হা ইস্তুয়ী ফি তাকদিরিল্লাহি ইজ্জা’লা।” (হাদীস)
“আল্লাহর বিধান একদিন ভালো হবে, কষ্টের শেষে এক দিন সাফল্য আসবে।”
“যে কোনও কষ্টে, আল্লাহ তা’আলা আমাদের জন্য একটি দরজা খুলে দেন।” (হাদীস)
এই হাদীসে বলা হয়েছে যে, কষ্টের পর আল্লাহ একজন ভালো পথ তৈরি করে দেন।
“যে কেউ ধৈর্য ধারণ করে, তার জন্য আল্লাহ একটি উত্তম পুরস্কার রাখেন।” (হাদীস)]

কষ্টের সময় ধৈর্যধারণ করলে আল্লাহ তা’আলা উত্তম পুরস্কার দেবেন।
“আল্লাহ কখনোই একটি জাতিকে পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের পরিবর্তন করে।” (সূরা রাদ, 13:11)
কষ্টের মাধ্যমে পরিবর্তন আসবে, এবং এটি আমাদের নিজেদের উন্নতি করার সুযোগ।
“আমি তোমাদেরকে কিছু ভয়, ক্ষুধা, এবং মাল-সম্পদ ও প্রাণের ক্ষতি দ্বারা পরীক্ষা করব।” (সূরা আল-বাকারা, 2:155)
কষ্টের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের পরীক্ষা করেন এবং এটি বিশ্বাসের শক্তি বাড়ায়।
“ধৈর্য ও প্রার্থনার মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য চাও।” (সূরা আল-বাকারা, 2:45)
কষ্টের সময় ধৈর্য ধারণ এবং প্রার্থনার মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য পাওয়া সম্ভব।
“যে কেউ আল্লাহর জন্য ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহ তার জন্য সহায়ক হন।” (হাদীস)
কষ্ট নিয়ে উক্তি
ধৈর্য ধারণ করলে আল্লাহ সহায়তা প্রদান করবেন।
“অবশ্যই, আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী।” (সূরা আল-আনকাবুত, 29:69)
আল্লাহর সাহায্য সবসময় কাছে থাকে, কষ্টের পর সহজতাও আসবে।
“সর্বোত্তম মানুষ সেই যে তার পরিবারের কাছে সৎ ও নৈতিক চরিত্রসম্পন্ন।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম মানুষ সেই, যে তার পরিবারের জন্য সবচেয়ে ভালো।”
“যে ব্যক্তির হৃদয়ে এক মিটার এক ইঞ্চি অহংকার থাকলেও, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “যে কেউ নিজের হৃদয়ে অহংকার ধারণ করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (মুসলিম)
“আল্লাহ তা’আলা তার বান্দাদের প্রতি সহনশীল ও দয়ালু।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “আল্লাহ তা’আলা তাদের প্রতি সহনশীল এবং দয়ালু যাঁরা সহনশীল ও দয়ালু।” (বুখারী ও মুসলিম)
“মুসলমানদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ব্যক্তি সেই, যে তার মুসলিম ভাইকে তার নিজের মতো ভালোবাসে।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো মুসলমান সেই, যে তার ভাইকে ভালোবাসে যেমন সে নিজেকে ভালোবাসে।” (বুখারী ও মুসলিম)
“যে মানুষ অন্যদের কল্যাণে সাহায্য করে, আল্লাহ তার কল্যাণ করবেন।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “যে ব্যক্তি মুসলমানের একটি কষ্ট লাঘব করে, আল্লাহ তাকে কিয়ামতের দিন তার কষ্ট লাঘব করবেন।” (মুসলিম)
“ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং মুসলমানদের কাজ হলো শান্তি ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “মুসলমান হলো সে ব্যক্তি, যার হাত ও জিহ্বা থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ।” (বুখারী)
“প্রতিটি দিন নতুন একটি সুযোগ; সুতরাং নিজেদের সংশোধন করতে চেষ্টা করো।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “প্রতিদিন সূর্যোদয়ের সাথে তোমাদের নতুন একটি সুযোগ আসে।”
“যে ব্যক্তি ক্ষমা করে, আল্লাহ তার ক্ষমা করবেন।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “যে ব্যক্তি অন্যদের ক্ষমা করে, আল্লাহ তার জন্য ক্ষমা প্রদান করবেন।” (বুখারী ও মুসলিম)
“মৃত্যুর পরে যা কিছু তুমি রেখে যাবে, তা তোমার জন্য সওয়াব হবে যদি তা তোমার জন্য কল্যাণকর হয়।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “মৃত্যুর পরে যে কাজগুলি সওয়াব নিয়ে আসে, তা হলো সদকা জারিয়া (অবিরাম সদকা) এবং সুসঙ্গতি।” (মুসলিম)
“যে মানুষ সৎ কাজ করে, তার জন্য পুরস্কার রয়েছে।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “যে ব্যক্তি ভাল কাজ করে, তাকে ভাল পুরস্কার দেওয়া হবে।” (বুখারী ও মুসলিম)
“তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম মুসলমান সেই, যে তার মুসলিম ভাইকে তার নিজের মতো ভালোবাসে।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম মুসলমান সেই, যে তার মুসলিম ভাইকে ভালোবাসে যেমন সে নিজেকে ভালোবাসে।” (বুখারী)
“যে ব্যক্তি অন্যের ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকে, সে ব্যক্তি সত্যিকারের মুসলমান।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “মুসলমান সেই ব্যক্তি, যার হাত ও জিহ্বা থেকে অন্যান্য মুসলমানরা নিরাপদ থাকে।” (বুখারী)
“আল্লাহ দয়ালু, দয়ালুতার বিপরীতে আঘাত করে না।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “আল্লাহ দয়ালু, এবং দয়ালুতার বিপরীতে আঘাত করে না।” (মুসলিম)
“যে ব্যক্তি ক্ষমা করে, আল্লাহ তার জন্য অধিক ক্ষমা করবেন।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “যে ব্যক্তি মানুষের কাছে ক্ষমা প্রদর্শন করে, আল্লাহ তার জন্য অধিক ক্ষমা করবেন।” (বুখারী ও মুসলিম)
“প্রথমে নিজেকে সংশোধন করো, তারপর অন্যদের শিক্ষিত করো।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “নিজে সৎ হওয়ার চেষ্টা করো, তারপর অন্যদের সৎ পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করো।”
“যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করে, তার জন্য জান্নাত রয়েছে।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করে, তার জন্য জান্নাতে প্রবেশের সুসংবাদ রয়েছে।” (মুসলিম)
“মৃত্যুর পরও সদকা যা অবিরত চলে, তা সর্বোত্তম।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “যে সদকা মৃত ব্যক্তির জন্য অব্যাহত থাকে, তা হচ্ছে সদকা জারিয়া।” (মুসলিম)
“তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ব্যক্তি সেই, যে পরিবারকে ভালোভাবে পরিচালনা করে।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ব্যক্তি সেই, যে তার পরিবারকে ভালোভাবে পরিচালনা করে।” (বুখারী)
“যে ব্যক্তি হজ পালন করে ও কোন অশ্লীলতা কিংবা পাপকর্ম করে না, সে নিজের পরিবার ও সম্পত্তির জন্য নবীনভাবে ফিরে আসবে।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “যে ব্যক্তি হজ পালন করে ও অশ্লীলতা কিংবা পাপ থেকে দূরে থাকে, সে নবীনের মত ফিরে আসবে।” (বুখারী)
“যে ব্যক্তি কষ্ট সহ্য করে, আল্লাহ তার জন্য পুরস্কার রাখেন।”
নবীজী (সা.) বলেছেন: “যে ব্যক্তি কষ্ট ও সমস্যার মুখোমুখি হয়ে ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহ তার জন্য বিশেষ পুরস্কার রাখেন।” (বুখারী ও মুসলিম)
এই বাণীগুলি নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনের আদর্শ, চরিত্র ও ইসলামী নীতির প্রতি আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং জীবনে সঠিক পথে চলার নির্দেশনা প্রদান করে।
শেষ কথা
মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষ একাকী বেঁচে থাকতে পারে না, এজন্য তাকে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে হয়, মহান মনীষীদের শরণাপন্ন হতে হয়, এবং সে অনুযায়ী জীবন গ্রহণ করলে, সঠিক পথে চলা যায়, মহান মনীষীগণ কষ্ট নিয়ে ইসলামিক উক্তি গুলো আমাদের জীবনে পরিবর্তন করতে সহযোগিতা করবে বলে আশা করছি।