অমানুষ হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো, এ মহান লেখকের বইটি জীবন বাস্তবতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার জন্য ‘ অমানুষ হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ ‘ বইটি পড়ে আমাদের পারিবারিক সামাজিক জীবন রীতির জন্য যে উপদেশ নামা দেওয়া আছে সেগুলো জেনে আমাদের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সহজ হবে।
অমানুষ হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ
জনপ্রিয় এই বুড়িগঙ্গা টিভি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘ অমানুষ হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ ‘ সম্পর্কে অল্প কথায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে,পাঠকের বুক রিভিউটি, এবং লেখককের দূরদর্শী সম্পূর্ণ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে, বুক রিভিউটি তে তথ্যবহুল আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ
“এইখানে একজন “মানুষ” ঘুমিয়ে আছে,
তাকে শান্তিতে ঘুমুতে দাও”
কাহিনী সংক্ষেপঃ
ইতালির পরিবেশ তখন ভীতিকর। শহর থেকে কিডন্যাপ হয়ে যাচ্ছে স্কুলের বাচ্চারা। বাবা মায়েরা ভয়ে তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে প্রায়। এই পরিস্থিতিতে পিচ্চি অ্যানি জেদ ধরে সে স্কুলে যাবেই৷ বাসায় তার ভালো লাগে না। অ্যানি, রুন এবং ভিকির এগারো বছর বয়সী একমাত্র কন্যা। অ্যানির জেদের কাছে হার মেনেই কিনা তার মা রাজি হয় তাকে স্কুলে পাঠাতে। কিন্তু এত রূপবতী অ্যানিকে একা পাঠানোর ভরসা পায় না রুন। তাই সে একজন বডিগার্ড ঠিক করেন অ্যানির জন্য।
জামশেদ, একজন কাঠখোট্টা কিন্তু দায়িত্ববান মানুষ। যাকে আবেগ, ভালোবাসা সবকিছুর উর্ধ্বে বলা চলে। তবে অ্যানির মতো পিচ্চির সংস্পর্শে এসেই কিনা নতুন করে ভালোবাসার উদয় হতে থাকে জামশেদের মনে। সেই কাঠখোট্টা, আবেগহীন মানুষটা অ্যানিকে নিজের মেয়ের মতো ভালোবাসতে শুরু করে। কিন্তু এই ভালোবাসাও বেশিদিন টিকলো না৷ অ্যানির আকষ্মিক মৃত্যু সবকিছু তচনচ করে দেয় এক নিমিষেই। নিমিষেই বদলে যায় একজন মানুষের শান্তশিষ্ট স্বভাব। প্রতিশোধের নেশায় মত্ত হয়ে উঠে পঞ্চান্ন বছর বয়সী এক বুড়ো ভালুক। তার নাম জামশেদ।

অমানুষ বুক রিভিউ
পাঠপ্রতিক্রিয়া ও পর্যালোচনাঃ
বরাবরই হুমায়ুন আহমেদকে আমার পাষাণ হৃদয়ের মনেহয়! বইয়ের শুরুতে যে চরিত্রের উপর মুগ্ধ হই, দিনশেষে সেই চরিত্রেরই ইতি টানেন উনি।
বিদেশি প্লটে লেখা দেখে ‘অমানুষ’ বইটা পড়া শুরু করেছিলাম।
বইটা শুরুই করেছিলাম কোনো প্রকার আশাভরসা ছাড়া, শুধুমাত্র হুমায়ূন আহমেদকে জানার জন্য। প্রত্যাশা না রেখেই বোধহয় ভালো করেছিলাম৷
রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও মানুষকে আপন করা যায়, ভালোবেসে তার জন্য সবকিছু করা যায়, সেটা হুমায়ূন আহমেদ আরো একবার দেখিয়ে দিয়েছেন এই উপন্যাসে।
অ্যানির প্রতি জামশেদের পিতৃতুল্য ভালোবাসা অভিভূত করেছে আমাকে। অ্যানির হঠাৎ মৃত্যুতে জামশেদের মধ্যে যে পরিবর্তন এসেছে, সেটা প্রায় অকল্পনীয় ছিলো। অ্যানির খুনিদের খুঁজে বের করা থেকে শুরু করে শাস্তি দেওয়া অব্দি, সবকিছুই ভয়ংকর সুন্দর ছিলো। সাধারণত হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস দীর্ঘ হয়ে থাকে, সেই হিসেবে চমৎকার গতিশীল ছিলো পুরো উপন্যাসটা।
পুরো বইটাই বেশ উপভোগ করেছি। বিশেষ করে অ্যানির তার বুড়ো ভালুকের প্রতি ভালোবাসা আবার সেই বুড়ো ভালুকের অ্যানির উপর মায়া পড়ে যাওয়া, মায়া থেকে নিজের মেয়ের মতো ভালোবেসে ফেলার ব্যাপারগুলো বেশি উপভোগ্য ছিলো। দুজনের বন্ধুত্বটাও দারুণ ছিলো। শেষটা যদিও আগে থেকেই ধারণা করা ছিলো। তবুও একটা আক্ষেপ রয়ে যায়। অমানুষদের উচিত শাস্তি দিয়ে চির শান্তিতে ঘুমিয়ে আছে একজন মানুষ। এই আক্ষেপ শান্তির আক্ষেপ।
হুমায়ুন আহমেদ এই ধরনের লেখাও লেখেন অমানুষ না পড়লে জানতেই পারতাম না। সম্পূর্ণ হুমায়ূনীয় প্যাটার্ন থেকে বের হয়ে একেবারে ভিন্ন আঙ্গিকে লেখা। উনার যে সমস্ত বই পাঠকমহলে জনপ্রিয়তা পেয়েছে সেই হিসেবে, এই অমানুষ বইটা আন্ডাররেটেডই মনে হলো।
তবে যারা মাসুদ রানা সিরিজের ‘অগ্নিপুরুষ’ পড়েছেন,তাদের কাছে গল্পটা পরিচিত মনে হতে পারে। কেননা, অগ্নিপুরুষ’ বইয়ের সাথে ‘অমানুষ’ এর প্লট প্রায়ই সেইম। তবুও অমানুষের জামশেদকেই আমার কাছে বেশি বাস্তবসম্মত মনে হয়েছে। ‘অগ্নিপুরুষ’ পড়েছিলাম বহুদিন আগে। বহুদিন পরে এসে সেই সময়ের প্রিয় বইয়ের মতো ভিন্ন একটি বই পড়তে খারাপ লাগে নি। বরং ‘অমানুষ’ পড়ার সময় কাহিনীটা আরও বেশি ভালো লেগেছে।
( কৃতজ্ঞ = বুক রিভিউ, সানজিদা রহমান ইমা, বইঃ অমানুষ, লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ)
শেষ কথা
মানুষের জীবনে অনেক উত্থান পতন রয়েছে, এই উত্থান পতন চরিত্রগুলো ‘ অমানুষ হুমায়ূন আহমেদ বুক রিভিউ ‘ বইটিতে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে, সুখ দুঃখ হাসি কান্নার জীবনবোধগুলো লেখক তার লেখনীতে তুলে ধরেছে, পাঠক তার নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য এই বইয়ের উপদেশগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।